‘ডাবে দুই ঢোক পানি, দাম ১০০ টাকা’
চুয়াডাঙ্গায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ডাবের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ৮০ টাকার ডাব এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে জনপ্রিয় এ পানীয়।
চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বর (চৌরাস্তা) মোড়, নিচের বাজার, রেল বাজার, পুরাতন জেলখানা মোড়, সদর হাসপাতাল রোডের উপশম মোড়, কবরী রোডের কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মোড়, কেদারগঞ্জ নতুন বাজার মোড় ও একাডেমি মোড়সহ শহরের যে কয়টি স্পটে ডাব বিক্রি হয় প্রত্যেকটি স্পটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ডাবের খুচরা মূল্য আকারভেদে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ ৭০-৯০ টাকার মধ্যে বিক্রি হওয়ার কথা ছিল এসব ডাব।
ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চালক মোহাম্মদ মজিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ডাব কিনলাম একটা, ছোট্ট ডাব। সেই ডাবে দুই ঢোক পানি অথচ দাম নিলো ১০০ টাকা। কী করবো, কিছু করার নাই!’

আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ডাব
ডাব কিনতে আসা আলমগীর কবির শিপলু বলেন, ‘গত সপ্তাহেও মাঝারি সাইজের ডাব কিনেছি ৭৫ টাকায়। এটা এখন দেখি ১০০ টাকা হয়ে গেছে। বড়টা তো ১৩০ টাকা। দাম এতো বেড়েছে যে কিনতেই ইচ্ছা করছে না। আবার যে গরম ডাব না খেলেও সমস্যা।’
দেবাশীষ বিশ্বাস নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণেই ডাবের দাম বাড়ছে। ডাব কিনে খাওয়ার উপায় নেই।’
চুয়াডাঙ্গা সদরের সরিষডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট। তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালেও গরম বেড়েছে বলে অনেক ব্যবসায়ী ডাবের দাম বাড়িয়েছেন। এ গরমে ডাব খাওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। এটা বুঝেই ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের সুযোগ নিচ্ছেন।’

আরও পড়ুন: ডাবের পানি যেসব রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে
চুয়াডাঙ্গাসহ জেলার উপজেলার শহরের খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ছোট-বড় ডাব খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে গড়ে ৪০-৫৫ টাকায় বিক্রি করতেন। এখন সেটা বেড়ে গড় দাম ৮০-১০০ টাকায় ঠেকেছে। বড় ডাব ১০০-১১০ টাকা, মাঝারি ৯০-১০০ টাকা এবং ছোট ডাব ৮০-৮৫ টাকায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের কিনতে হচ্ছে।
শহরের কোর্ট মোড় এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেন, ‘ডাবের পাইকারি দর এখন বেশি। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। মানুষের চাহিদা আগের তুলনায় বেশি। তবে সরবরাহ যদি বাড়ে তবে দামও কমে যাবে।’
শহীদ হাসান চত্বরের খুচরা ডাব বিক্রেতা হারুন আলী বলেন, ‘ভাই, ডাব পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাচ্ছি দাম বেশি হওয়ায় কাস্টমাররা দরদাম করছেন। দাম বেশি নেওয়ায় পরিচিতরা রাগ করছেন।’
আরও পড়ুন: ২০০ টাকা ছুঁয়েছে ডাবের দাম
চুয়াডাঙ্গা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে পাইকারি ডাব বিক্রেতা শিমুল হোসেন বলেন, প্রায় সব অঞ্চলে এখন নারিকেল গাছ কমে গেছে। এ কারণে চাহিদা মিটছে না। ফলে ডাবের দাম বেশি।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ বলেন, আমরা কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে মূল্যতালিকা টাঙাতে বলা হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খুচরা ব্যাবসায়ীরা যে দামে ডাব কিনছেন, তার ভাউচার সংরক্ষণ করতে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, ডাব নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে দেওয়া হবে না। আমাদের মার্কেটিং বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এসআর/জিকেএস