নদীর ঘাটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব
নালিশ দিতে গিয়ে লাশ হলো কিশোর
নরসিংদীতে নদীর ঘাটের ইজারা ও নৌকার সিরিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রকাশ্যে গরু জবাইয়ের ছুরি ও রামদা কুপিয়ে সাজিন নামে এক কিশোরকে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আরও ৫ জন গুরুতর আহত হন।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে কাউরিয়াপাড়া প্রধান সড়কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থতি বিরাজ করছে। সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহত সাজিন কাউরিয়া পাড়া এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। সে আলীজান জে এম একাডেমীর অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন নরসিংদীর কাউরিয়া পাড়ায় নতুন লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ছিলেন মতিন মিয়া। গত জুন মাসে আলমাস কমিশনারসহ আরও কয়েকজন নতুন করে ইজারা নেন। ইজারাদার পরিবর্তন হলেও মতিন ও তার সমর্থকরা ঘাট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাতেন। ফলে মতিন মিয়ার বোটগুলো বিনা সিরিয়ালে চলতো। এতে ইজারাদারের লোকজন বাধা দিলে মতিন মিয়ার ছেলে রাব্বি নাজমুলসহ তার সমর্থকরা তাদের মারপিট করেন। এমনকি ক্যাশবাক্স থেকে টাকা লুট করে নিয়ে আসেন।

শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে মতিন মিয়ার ছেলে রাব্বিসহ কয়েকজন লঞ্চঘাটে গিয়ে হট্টগোল করেন। এতে বাধা দিলে বর্তমান ইজারাদার আলমাস কমিশনারের সমর্থকদের মারপিট করেন তারা। পরে লঞ্চঘাট থেকে ইজারাদারের পক্ষের ৭-৮ জন মতিনের বাড়িতে নালিস জানাতে যান। ওই সময় মতিন ও তার ছেলেসহ ২০-২৫ জন সমর্থক গরু কাটার ছুরি, রামদাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। তাদের এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাতে সাজিনসহ ৬ জন গুরুতর আহত হন।
পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে মতিন সমর্থকরা চলে যান। আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সাজিনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সদর থানার এসআই সাইয়াদুর জানান, ঘাটের ইজারা ও বোটের সিরিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধান ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে।
সঞ্জিত সাহা/এফএ/এএসএম