ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সোয়া ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি | নোয়াখালী | প্রকাশিত: ০৩:৫৫ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৩

নোয়াখালী সদর উপজেলার কালাদরপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত উল্যাহ সেলিমের বিরুদ্ধে পরিষদের সোয়া দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন সদস্যরা (মেম্বার)। একইসঙ্গে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা উপকারভোগীদের না দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

সোমবার (৯ অক্টোবর) বেলা ১১টায় নোয়াখালীর মাইজদীর একটি রেস্তোরাঁয় কালাদরপ ইউনিয়নের আট মেম্বার সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এরআগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ওই চেয়ারম্যানের ওপর অনাস্থা এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিত দিয়েছিলেন পরিষদের ৯ মেম্বার।

ইউপি মেম্বারদের অভিযোগ, কালাদরপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত উল্যাহ সেলিম নির্বাচিত হওয়ার পর গত দুই বছরে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করে এবং সংগৃহীত টাকা পরিষদের হিসাবে জমা না দিয়ে প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করে ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম সভা করেন। এরপর পরিষদের আর কোনো সভা ডাকেননি।

২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম কুদ্দুস লিখিত বক্তব্যে জানান, মেম্বারদের বাদ দিয়ে স্বেচ্ছাচারী, দুর্নীতি ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পরিষদ চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান শাহাদাত উল্যাহ সেলিম। তিনি দুই বছরে বিভিন্ন ট্যাক্সের ২৮ লাখ, ১০ হাজার ৭০০ পরিবারের হোল্ডিং প্লেটের ১৭ লাখ ১২ হাজার, ইচ্ছামতো বাড়ানো হোল্ডিংয়ের ৭৪ লাখ ৯০ হাজার, ট্রেড লাইসেন্সের ২০ লাখ, ভূমি হস্তান্তর করের ৩২ লাখ ও ৪০ দিনের কর্মসূচির ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

jagonews24

আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ সদস্যের অনাস্থা

লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, চেয়ারম্যান সেলিম অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারীভাবে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন ভাতা, বরাদ্দ ও আশ্রয়ণের ঘর প্রকৃত উপকারভোগীদের না দিয়ে নিজের লোককে দিয়ে আত্মসাৎ করে আসছেন। এমনকি অতি দরিদ্রদের জন্য দেওয়া ১৫ টাকা কেজির চাল নিজের লোকদের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন। এডিপি, টিআর, জিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পেও ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে।

৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী মেম্বার রুমি আক্তার বলেন, ‘চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম আমার থেকে ২৫টি সাদা চেকে সই নিয়ে এখন ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে তুলে নিচ্ছেন। এ বিষয়ে তাকে বলার পর চেয়ারম্যান ও তার লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন।’

অভিযোগে আরও জানা যায়, ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী মেম্বার শেফালী বেগমের থেকে ২১টি সাদা চেকে সই নিয়ে রেখেছেন চেয়ারম্যান। এমনকি গত কোরবানির ঈদে সরকারের দেওয়া গরিবদের জন্য উপহারের ২৫ টন চালের হদিস পাননি মেম্বাররা। এছাড়া ১৪৭টি ভিজিডি কার্ডের ৫৫টির বরাদ্দ প্রতিনিয়ত তুলে নিচ্ছেন চেয়ারম্যানের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম কুদ্দুস, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. নাছির, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আহসান উল্যাহ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালাম আজাদ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হানিফ শেখ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল বাসার, ৪ ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী মেম্বার আলেয়া বেগম এবং ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী মেম্বার রুমি আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

jagonews24

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কালাদরপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত উল্যাহ সেলিম। তিনি বলেন, ‘পরিষদের কয়েকজন মেম্বার ভুল বুঝে মান-অভিমান করে আছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রের মাধ্যমে এর সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

এরআগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর কালাদরপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত উল্যাহ সেলিমের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন পরিষদের ৯ মেম্বার।

ইউএনও আঁখিনূর জাহান নীলা অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশরেফুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। জবাব পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এমএস