ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ছিনতাইয়ের প্রতিশোধ নিতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি | গাজীপুর | প্রকাশিত: ০৫:৪৬ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

ছিনতাইয়ের প্রতিশোধ নিতে দুই ভাইকে নৃসংশভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ৩ দিনের মাথায় মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে ঘটনায় জড়িত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গ্রেফতার মো. আব্দুল আউয়াল (৫১) পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বাশবুনিয়া এলাকার মৃত হাতেম আলীর ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন বাঙ্গালগাছ এলাকায় ভাড়াবাড়িতে বসবাস করেন। তিনি বাঙ্গালগাছ বাঁশবাজার এলাকায় পান ব্যবসায়ী।

গত ২০ অক্টোবর সন্ধ্যার কিছুপর গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন বাঙ্গালগাছ সাকিনস্থ বাঁশবাজার তিন রাস্তার মোড় এলাকায় দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার দুই দিন আগে ঘাড়ে চাপাতি ধরে ৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের প্রতিশোধ নিতেই দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

নিহতরা হলেন, শফিকুল ইসলম (২৫) ও শুক্কুর আলী(২২)। তারা ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার মহেষকুড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। তারা গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন ভুরুলিয়া এলাকায় আ. রশিদের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১টায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-১ এর স্পেশালাইজড পোড়াবাড়ী ক্যাম্প কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন।

তিনি জানান, গত ২০ অক্টোবর দুই ভাইকে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি-সোঠা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপুরি আঘাত ও কোপ দিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে অজ্ঞাত আসামিরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতদের বাবা মো. আবুল কাশেম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সদর মেট্রো থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তিনি আরও জানান, মামলা হওয়ার পর আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে র‌্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানির আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে যে ঘটনায় জড়িত প্রধান পলাতক আসামি মো. আব্দুল আউয়াল গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন শিমুলতলী বাজার সমরাস্ত্র কারখানা এলাকায় আত্মগোপনে আছেন। পরে মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেনের নেতৃত্বে উক্ত স্থানে অভিযান চালিয়ে মো. আব্দুল আউয়ালকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল আউয়াল স্বীকার করেছেন ঘটনার দিন নিহত দুই ভাইসহ ৪ জন একটি অটোরিকশায় ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঙ্গালগাছ বাজারের বিল্লালের দোকানে ভাঙচুর করেন। পরে গ্রেফতার আসামি আব্দুল আউয়ালের শ্যালক রাসেলের মুদি দোকানের ফ্রিজ ভাংচুর করে এবং দোকানের সিসি ক্যামরার যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়। পরে তারা জুলহাসের গাড়ি ওয়াশিং পয়েন্টে জুলহাস ও মমিনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির পর হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বাজারের চারদিক থেকে আব্দুল আউয়ালসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জন মিলে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে ভিকটিম শফিকুল ইসলাম ও শুক্কুর আলীকে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান।

এছাড়াও আসামি মো. আব্দুল আউয়াল র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, গত ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় আব্দুল আউয়াল দোকানের পান সুপারি ও অন্যান্য মালামাল ক্রয় করার জন্য জয়দেবপুর বাজারে যাওয়ার পথে হাজীবাগ রোডে পৌঁছালে নিহত শফিকুল ইসলাম ও শুক্কুর আলীসহ ৫ জন তার পথরোধ করেন। পরে শফিকুল ইসলাম তার ঘাড়ে চাপাতি ধরে সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এই ক্ষোভে তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে শফিকুল ইসলাম ও শুক্কুর আলীকে হত্যা করেছেন।

এফএ/এএসএম