বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ
৭৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে দুজন পাস, একজন পেলেন জিপিএ-৫
শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার মাধ্যমিক স্তরে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও এখনো পিছিয়ে আছে রাজবাড়ীর পাংশায় অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ।
চলতি বছর কলেজটির মানবিক শাখা থেকে ৭৫ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়েছেন মাত্র দুজন। এদের মধ্যে একজন জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
রোববার (২৬ নভেম্বর) প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিষ্ঠানটির পাসের হার মাত্র ২.৬৭ শতাংশ। ফলাফল খারাপ হওয়ায় হতাশ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। এ অবস্থায় শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজটি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের বহলাডঙ্গায় অবস্থিত। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ২০২১ সালে সরকারিকরণ হয়। বর্তমানে কলেজটিতে অধ্যক্ষসহ ২৭ শিক্ষক ও খণ্ডকালীন হিসেবে চারজন শিক্ষক কর্মরত আছেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে আছেন ১৪ কর্মচারী।
এ প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২০ সালে এইচএসসিতে শতভাগ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। তখন ৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেন। এরপর ২০২১ সালে ১০৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন ৮৭ জন, পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। ২০২২ সালে ৫১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন ৩৬ জন, পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। কিন্তু সবশেষ ২০২৩ সালে কলেজটি থেকে ৭৫ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন মাত্র দুজন এবং এবছর পাসের হার মাত্র ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী আকাশ জানায়, রেজাল্ট খারাপের পেছনে মূলত আমরাই দায়ী, শিক্ষকরা নয়। কারণ আমরা ঠিকমত ক্লাস বা কলেজ করতাম না। তবে কিছু কিছু শিক্ষক ফাঁকি দিতেন। এছাড়া আমরা ভেবেছিলাম অন্যবারের মত এবারের প্রশ্নপত্র সহজ হবে। প্রশ্ন কঠিন হলেও পরীক্ষায় সবাই ফেল করবে এটা কেউ ভাবেনি।
সরিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজমল আল বাহার বলেন, অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের দায়িত্ব অবহেলা ও নিয়মিত পাঠদান না করানোয় আজ রেজাল্টের এ অবস্থা। এটা কলেজের নয়, আমাদের এলাকার অপমান। এ অবস্থা চলতে থাকলে এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। এর দায় অধ্যক্ষের? অনেক আশা নিয়ে নিজেদের জমি দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। সরকারিকরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি কয়েকবছর কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বে ছিলাম। তখন কলেজের পড়াশোনার মানের পাশাপাশি রেজাল্টও ভালো ছিল।
সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, করোনার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু প্রভাব পড়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটেছে। হয়তো এর কারণে বঙ্গবন্ধু কলেজের পরীক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। এছাড়া এবার গত কয়েকবছরের তুলনায় প্রশ্নপত্রেও একটু ভিন্নতা ছিল, হয়তো সে কারণেও খারাপ হতে পারে।
ফলাফলের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নবিউল ইসলাম ‘আমি খাবার খাচ্ছি, পরে কথা বলবো’ বলে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার তার মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
রুবেলুর রহমান/এসজে/এএসএম