পাটুরিয়া
ফেরিডুবির ঘটনায় দ্বিতীয় চালক বরখাস্ত
ফাইল ছবি
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ফেরিডুবির ঘটনায় দ্বিতীয় চালক আনজুমান ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান ড. একেএম মতিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে উদ্ধার হওয়া ফেরি ‘রজনীগন্ধা’ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান বলেন, ফেরিডুবির ঘটনায় আরও কারো গাফিলতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেরিটি মেরামতের জন্য নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হবে।
এসময় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা জানান, পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধারের ঘটনা সরকারিভাবে দেশের সবচেয়ে বড় উদ্ধার তৎপরতা। কয়েকদিনের চেষ্টার পর সফলভাবে ফেরিটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। একইসঙ্গে ফেরিটি বিআইডব্লিউটিসির কাছে হস্তান্তর করে উদ্ধারকাজের আনুষ্ঠানিক সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
এরআগে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। তার আগে মঙ্গলবার দুটি ট্রাক উদ্ধারের মধ্যদিয়ে সবগুলো যানবাহনই উদ্ধার শেষ হয়।
আরও পড়ুন: ৮ দিনের চেষ্টায় উদ্ধার হলো ফেরি রজনীগন্ধা
উদ্ধারকাজে প্রথমে ‘হামজা’, ‘রস্তম’ এবং সবশেষ জাহাজ ‘প্রত্যয়’ অংশ নেয়। প্রত্যয় দেশের সবচেয়ে বড় উদ্ধারকারী জাহাজ। যার ধারণক্ষমতা ২৫০ টন।ডুবে যাওয়া ফেরিটিরও ২৫০ টন ধারণক্ষমতা ছিল। ডুবে যাওয়ার পর পলি জমে এর ওজন আরও বেড়ে যায়। যে কারণে ফেরিটি ‘প্রত্যয়’ আদৌ তুলতে পারবে কি না তা নিয়ে নানা শঙ্কা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা কাটিয়ে সফলভাবে ফেরিটি উদ্ধারে সক্ষম হয় ‘প্রত্যয়’।
নৌবাহিনীর ডুবুরির দলের সমন্বয়ক লেফটেন্যান্ট শাহ পরাণ ইমন বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর ডুবুরিদল উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। শীত ও নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বেশ কয়েজন ডুবুরি সদস্য আহতও হয়েছেন। তারপরও সফলভাবে ফেরি, যানবাহন এবং নিখোঁজ হুমায়ুন কবিরকে উদ্ধার করা গেছে। এজন্য সবাই গত কয়দিনের কষ্ট ভুলে গেছেন।
গত ১৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাটুরিয়া পাঁচ নম্বর ফেরিঘাটের অদূরে ৯টি ট্রাক নিয়ে রজনীগন্ধা নামের ইউটিলিটি ফেরিডুবির ঘটনা ঘটে। তবে ফেরিতে কোনো যাত্রীবাহী বাস ছিল না।
দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহায়তায় ২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন স্থানীয়রা। নিখোঁজ থাকেন রজনীগন্ধা ফেরির সেকেন্ড অফিসার হুমায়ুন কবির। পাঁচদিন পর দুর্ঘটনাস্থলের ৬ কিলোমিটার দূরে মরদেহ ভেসে ওঠলে উদ্ধার করা হয়।
দুর্ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানাযাবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান।
বি এম খোরশেদ/এসআর/এএসএম