অপহরণের পর ৯৯৯ নম্বরে কল, ৪ তরুণ গ্রেফতার
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন কল পেয়ে বগুড়ার গাবতলীতে এক নারী নৃত্য শিল্পী ও তিন আলোকচিত্রকরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় চার অপহরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে চার তরুণকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর সোয়া ৫টার দিকে ওই গ্রামের বুড়িতলা মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার ও অপহৃতদের চারজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অপহৃত আলোকচিত্রকর মোন্তাসির শিশির বাদী হয়ে গাবতলী থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। বিকেলে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হলে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা গ্রেফতারদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতাররা হলেন, গাবতলী উপজেলার রামেশ্বাপুর পাঁচকাতুলী গ্রামের সাফিন মিয়া (২২), আব্দুস ছালাম (২০), মামুনুর রশিদ (২০) ও মোস্তাকিম (১৯)। বুধবার বিকেলে গাবতলী থানা পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার ভোরে বগুড়া সদর থানা এলাকার এক বাসিন্দা ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’-এ ফোন করে জানান তার বোন নৃত্য শিল্পী সামিয়া পপিসহ চারজনকে গাবতলী থানার রামেশ্বাপুর গ্রামে অপহরণ করে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীরা তার বোনের ব্যবহত মুঠোফোন নম্বর থেকে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করেছেন।
৯৯৯ থেকে কলারের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করে উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় রামেশ্বরপুরের পাঁচকাতুলী বুড়িতলা মোড়ে আরিফুল ইসলাম রাঙ্গা নামে এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরিফুলসহ বেশ কয়েকজন অপহরণকারী পালিয়ে যায় ও হাতেনাতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় পুলিশ একটি চাপাতি ও চাকুসহ মাদকসেবনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করে। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে অপহৃত চারজনকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, মামলার বাদী মোন্তাসির ও তার দুই বন্ধু অর্কো এবং জয় পেশায় আলোকচিত্রকর। মঙ্গলবার রাতে বগুড়া শহর থেকে রামেশ্বাপুরের পাঁচকাতুলী গ্রামে একটি বাড়িতে নৃত্য শিল্পী সামিয়াসহ তারা এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যান। রাত ১০ টার পর অনুষ্ঠান শেষে সিএনজি চালিত অটোরকিশাযোগে শহরে ফেরার পথে ওই গ্রামের বুড়িতলা মোড়ে আরিফুল নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক তাদের গতিরোধ করে কাছে থাকা ১৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাদের অন্য তিনটি অটোরিকশায় উঠিয়ে আরিফুলের পরিত্যক্ত গোডাউনে আটকে রেখে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সামিয়ার ব্যবহত মুটোফোন নম্বর দিয়ে তার এক ভাইয়ের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আরিফুল একটি ইট দিয়ে সামিয়ার মাথায় গুরুতর আঘাত করেন। উদ্ধারের পর তাকে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গাবতলী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, আরিফুল অপহরণকারী চক্রটির মূলহোতা। তাকেসহ পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এনআইবি/জিকেএস