ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

গাজীপুরে সংঘর্ষে নিহত ৯

জেলা প্রতিনিধি | গাজীপুর | প্রকাশিত: ১০:৫৭ এএম, ০৬ আগস্ট ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বাসন থানায় পুলিশের গুলিতে একজন ও কালিয়াকৈরে আনসার সদস্যদের গুলিতে দুজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে অর্ধশতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এসময় শ্রীপুরে বিজিবির তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ বিভাগে নিয়োজিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কয়েকটি বাস ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ঢাকায় যাচ্ছিল। বাসগুলো মহাসড়কের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় এলে আন্দোলনকারী ছাত্র ও জনতা আটকে দেয়। দুটি বাসে থাকা প্রায় ৮০ বিজিবি সদস্যদের মুলাইদ এলাকার বাংলাদেশ ফিলিং স্টেশনের সামনে আটকে দেয়।

একপর্যায়ে আন্দোলনকারী ছাত্র ও জনতা বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। এসময় বিজিবি সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেন। দুপুর থেকে কয়েক ধাপে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জন নিহত ও অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হন।

অবরুদ্ধ থাকার খবর পেয়ে আশপাশের ক্যান্টনমেন্ট থেকে সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজিবি সদস্যদের উদ্ধারে করে।

নিহতরা হলেন সিফাতউল্লাহ (২২), শরীফ আহমেদ (২০), কাওসার (২৮), জুয়েল মৃধাসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা দুজনসহ মোট ছয়জন।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, আজাহার (৩০), ফারুক (২৬), মারুফ (১৯), ইদ্রিস (৩০), রিয়াজ (২৪), স্বপন (৩৫), বাবুল (২১), জাকির (৫২), শামীম (৩০), রায়হান (২৮) অজ্ঞাতনামা আরও কমপক্ষে অর্ধশতাধিক।

মাওনা চৌরাস্তার আলহেরা মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এ পর্যন্ত হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পাঁচজনের মরদেহ এসেছে। তাদের মধ্যে তিনজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। এছাড়া অপর দুজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি।

একজনের মরদেহ উপজেলা মাওনা এলাকায় তার আত্মীয় আরিফ সরকারের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ ২২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আলহেরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে গুলিবিদ্ধ ২২ জনসহ ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জারিন ফারা বলেন, বিকেলের দিকে চারজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসাকে ফোন দিলেও তারা রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতা গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানায় হামলার চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে একজন (২৩) নিহত হয়েছেন। তার পরিচয় জানা যায়নি। সোমবার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এসময় অজ্ঞাতপরিচয় একজন মারা যায়। গুলি শেষ হয়ে গেলে থানা ফেলে সব পুলিশ সদস্য পালিয়ে যান।

অপরদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমিতে আন্দোলনকারীরা হামলা চালিয়ে দুটি ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। এসময় আনসার সদস্যরা গুলি চালায়। এতে অন্তত দুজন নিহত হয়। আহত হয়েছে শতাধিক।

আহতদের সফিপুর মডার্ন হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, তানহা কেয়ার হাসপাতাল ও টাঙ্গাইলের কুমুদিনি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহতরা হলেন, এলিম হোসেন (৩০), অপর এক যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ৪০ বছর।

সফিপুর মডার্ন হাসপাতালের চিকিৎসক সাদ্দাম হোসেন বলেন, হাসপাতালে দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। এছাড়া আরও দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের গাজীপুর শহীদ তাজউীদ্দন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/জেআইএম