উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় খুলেছে পোশাক কারখানা
নারায়ণগঞ্জে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে চলমান অস্থিরতায় বন্ধ সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে জেলার প্রায় সব শিল্প-কারাখানা শ্রমিকরা ফিরেছেন।
স্থানীয় ও কারখানা সূত্র জানায়, কারখানা মালিকরা রয়েছেন উভয় সংকটে। কারখানা না খুললে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারবেন না; শিপমেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে আবার কারখানা খুললে কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী-টোকাই শ্রেণির লোকজনের হুমকির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। কোথাও কোথাও কারখানা ভাঙচুরও হচ্ছে।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে ব্যাপক সহিংসতার পর গত ৪ আগস্ট দেশের সব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিজিএমইএ। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জেও সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখা হয়।
এরমধ্যে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করেন। পরে আবার কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কারাখানা খোলা হলেও আতঙ্ক তাদের পিছু ছাড়ছে না।
ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরী এলাকার পোশাক শ্রমিক রিপন বলেন, আমরা দেশে শান্তি চাই। কোনো অশান্তি চাই না; আমরা কর্ম করে খেতে চাই। ক্ষমতায় কে আসবে না আসবে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের গার্মেন্টস সেক্টর সন্ত্রাসমুক্ত থাকুক সেটাই আমাদের চাওয়া।
ফতুল্লার বিসিক এলাকার এসরোট্যাক্স গ্রুপের ডাইং ম্যানেজার উবায়দুল বলেন, এ কয়দিন আমাদের কর্মস্থানে আসতে পারিনি। আমাদের শ্রমিকরা কর্মস্থানে আসতে পারিনি। একদিন আমাদের কারখানা বন্ধ থাকলে সংসারে অনেক চাপ পড়ে যায়। যাই হোক আবার কারখানা খোলা হয়েছে। আমরা আবারও আমাদের কর্মস্থানে ফিরেছি।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি (অর্থ) মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, সব কারখানা খোলা হয়েছে। কয়েকটা কারখানা খোলার পর গন্ডগোল হওয়ার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আসলে আতঙ্ক নিয়ে আমাদের কারখানাগুলো চলছে।
জেলা বিসিক কার্যালয়ের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। একটা শ্রেণির লোকজন নানাভাবে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে। যার কারণে কারখানা মালিকরা নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সব সমস্যার সমাধানের জন্য।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আমরা অতিদ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা প্রতিনিয়ত মিটিং করছি ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর্মি টহল দিচ্ছে র্যাবও টহল দিবে। আমরা সব শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে বসছি। আমরা বারবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যার কারণে তুলনামূলকভাবে নারায়ণগঞ্জে সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত রয়েছে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/আরএইচ/এমএস