এসডিজি লক্ষ্য পূরণে বেসরকারি তথ্য শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম গঠনের তাগিদ
জাতীয় এসডিজি রিপোর্ট শীর্ষক আলোচনা সভা করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম
সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) বা টেকসই উন্নয়ন অভিলক্ষ্য পূরণে বেসরকারি খাতের তথ্য শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। ‘জাতীয় এসডিজি রিপোর্ট (ভিএনআর) ২০২৫ ও ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তাদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এতে সূচনা বক্তব্য দেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ফোকাল পয়েন্ট তারাননুম জিনান।
অনুষ্ঠানে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপ এবং কমিউনিকেশন পরিচালক শামীমা আক্তার বলেন, আমরা চারটা পিলারে কাজ করি- ক্লাইমেট, নেচার, প্লাস্টিক এবং লাইভলিহুড। ইউনিলিভার একটি বড় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান। এই কারণে আমাদের অনেক কাজ করতে সুবিধাও আছে, অসুবিধাও আছে।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে যখন এই একই প্রোগ্রাম হয়েছিল তখন আমরা অনুরোধ করেছিলাম যাতে আমাদের একটা ভলেন্টিয়ারি প্ল্যাটফর্ম দেওয়া হোক। যে সংগঠনগুলো রিপোর্ট করতে চায় তাদের উৎসাহ দেওয়া হোক। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি। অনেক কোম্পানি আছে যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে তথ্য শেয়ার করতে চায়।
- আরও পড়ুন
রমজানে রোজাদারদের তৃষ্ণা মিটাচ্ছে সেরা ওয়াটার ট্যাঙ্ক
শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিক্ষা কারিকুলাম পুনর্বিবেচনার তাগিদ
শামীমা আক্তার বলেন, আমরা বাংলাদেশে ভলেন্টিয়ারি সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং করি, জিআরই রিপোর্টিং করি না। কারণ গ্লোবালি আমাদের ডিসকারেজ করা হয় যে পলিসি বা আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলে এই কাজটা আসলে কঠিন। এমন রিপোর্ট করতে অনেক এফোর্ট দিতে হয়। তবুও আমরা এটা করি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য আছে ২০২৩ সালের মধ্যে নেট জিরো হওয়ার। এজন্য একটা সাবান উৎপাদন থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয় সেটা আমাকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে নির্ণয় করতে হয়। আমাকে রিপোর্ট করতে হয় প্রতিটা পদক্ষেপে আমি কীভাবে কার্বন নিঃসরণ কমিয়েছি। এই প্রতিটা ডেটা আমাদের ভিএনআরে যাওয়া উচিত। কিন্তু আমরা জানি না কীভাবে এসব ডেটা বাংলাদেশ সরকারকে দেবো।
বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর একটা গ্লোবাল ফ্রেমওয়ার্ক থাকে জানিয়ে শামীমা আক্তার বলেন, আমাদের ব্যবহারকারীরাও রেসপনসিবল প্রডাকশন নিয়ে সচেতন না। যেমন একটা উদাহরণ দেই- আমাদের সাবানে যে পাম তেল ব্যবহার করা হয় সেটা অন্য কোম্পানি থেকে দাম বেশি, কারণ আমরা রেসপনসিবল ফরেস্টশনের মাধ্যমে আনি। ফলে অন্য কোম্পানির সাবানের তুলনায় আমাদের সাবানের দাম একটু বেশি হয়।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক বলেন, উন্নয়ন বাজেট দিয়ে এসডিজি গোল পূরণ হবে না, এখানে সরকারের অংশগ্রহণ লাগবে। আমাদের দেশে সামাজিক ব্যবসার জন্য এখনো কোনো লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হয়নি। আর্থিক সুযোগ, রেসপনসিবল প্রডাকশন, ডিসেন্ট এমপ্লয়মেন্ট নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যক্তিখাতের তথ্য শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম দরকার, যার মাধ্যমে যথাযথ নীতি নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে সাসটেইনেবিলিটি সরাসরি সংযুক্ত।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (এসডিজি বিষয়ক) শিহাব কাদের বলেন, বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটির যে ইকো সিস্টেম সেটাকে কীভাবে রেভ্যুলিউশনাইজড করা যায় সেদিকে কাজ করতে হবে। এবারের ভিএনআর প্রতিবেদনটা আমরা এমনভাবে করতে চাচ্ছি যাতে এটা ট্রান্সপারেন্ট হয় এবং পলিসি মেকাররা যাতে নীতি নির্ধারণের সময় এটাকে বিবেচনা করে।
এসআরএস/কেএসআর