শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই
টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো/ প্রতীকী ছবি
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও পরবর্তীতে টানা দরপতনের মধ্যে পড়েছে। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (৮ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পাশাপাশি কমেছে সবকয়টি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
আগের তিন কার্যদিবসের মতো বুধবারও শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষদিকে ভালো-মন্দ সব খাতের প্রতিষ্ঠানের এক প্রকার ঢালাও দরপতন হয়। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২১টির। এছাড়া ৭৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২৩টির দাম কমেছে এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৫২টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন
এআই ব্যবহারে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমবাজারে ৭% চাকরি ঝুঁকির মুখে
ভুয়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপ থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান বাংলাদেশ ব্যাংকের
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৫টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫১ পয়েন্টে নেমে গেছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬১১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৮৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৭৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিভিও পেট্রো কেমিক্যালের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৫২ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, কে অ্যান্ড কিউ, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, প্রগতী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, প্রগতী ইন্স্যুরেন্স এবং সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ২২ লাখ টাকা।
এমএএস/কেএসআর/জিকেএস