অর্থ উপদেষ্টা
বাংলাদেশে সংস্কার অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়াবে
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ফাইল ছবি
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও চলমান সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আরও বাড়াবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মার্কিন ব্যবসায়ীদের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের চিত্র তুলে ধরা হয়। পরে অর্থ উপদেষ্টা জানান, গত এপ্রিলের বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকের পর গত ছয় মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের কারণে দেশে আগামীতে মার্কিনীদের ব্যবসা বাড়বে
আরও পড়ুন
এশিয়ার জিডিপি ১.৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে আঞ্চলিক সহযোগিতা
বিশ্ব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ‘বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব’ মেটাতে হবে
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গতবার আমাদের সফরের সময় আপনারা দেখেছিলেন বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে কিছু চাপ ছিল। এখন সেই বাজার অনেকটা স্থিতিশীল হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে এবং রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।’
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার লেনদেন ও পেমেন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা নিরসন করেছে এবং দীর্ঘদিনের একাধিক অপেক্ষমাণ আবেদন নিষ্পত্তি করেছে।
‘আমাদের সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, তবে এখন এর ফল দৃশ্যমান হচ্ছে। এই অগ্রগতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনছে। আর আমাদের মার্কিন অংশীদাররাও স্বীকার করেছেন—এই ধরনের উন্নতি দৃঢ় নীতি প্রতিশ্রুতি ছাড়া সম্ভব ছিল না’, বলেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে মার্কিন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতে স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে তারা নিয়ন্ত্রক সংস্কার, ট্যাক্স রিফান্ড এবং বীমা খাতের আধুনিকায়ন সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তারা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার না হলে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হতো না এবং অগ্রগতিও হতো না।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এই বিষয়গুলো আমরা এরই মধ্যে বিবেচনায় নিয়েছি। আমাদের অনলাইন নীতিমালার মধ্যেই এসব সংস্কার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে মার্কিন ব্যবসায়ীরা এর বাস্তব ফলাফল দেখতে পারবেন।’
আরও পড়ুন
মন্দা মোকাবিলায় সাহসী বৈশ্বিক নীতির আহ্বান আইএমএফ প্রধানের
বাংলাদেশসহ ১০ দেশে ফান্ডসচেইন ব্যবহার করছে বিশ্বব্যাংক
‘সরকার সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট—সংস্কার সম্পন্ন করে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত করা।’ বলেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বল্প সময়ে অর্থনীতি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় ইউএস চেম্বারের নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেছেন বলেও জানান বৈঠকে অংশ নেওয়া সরকারের প্রতিনিধিরা
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ২০২৫ সালের আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণের অংশ হিসেবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
আইএইচও/এমএমএআর/জিকেএস