১ জানুয়ারি থেকে কমতে পারে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা
অর্থ মন্ত্রণালয়/ফাইল ছবি
ছয় মাসের ব্যবধানে আবারও সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য নতুন মুনাফার হার নির্ধারণে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের অনুমোদনের জন্য তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
অনুমোদন মিললে অর্থ বিভাগ প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) পাঠাবে। এরপর আইআরডি নতুন হার সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করবে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। নতুন প্রস্তাবে গড়ে মুনাফার হার ০.০৫ শতাংশ কমানোর কথা বলা হয়েছে। তবে তুলনামূলক কম অঙ্কের বিনিয়োগে মুনাফার হার বর্তমান পর্যায়ের কাছাকাছি রাখা হবে। বিপরীতে, বেশি অঙ্কের বিনিয়োগে মুনাফা কিছুটা কমানো হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা এর কম বিনিয়োগে মুনাফার হার বেশি থাকবে, আর এর বেশি বিনিয়োগে হার হবে কম।
সরকারের আয় ও ঋণ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে গত ৩০ জুন সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার নিয়মিত পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সময় গড় মুনাফার হার কিছুটা কমিয়ে ছয় মাস পর পুনর্নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আগামী ৩১ ডিসেম্বর ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় থাকা সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্র সবচেয়ে জনপ্রিয়। বর্তমানে এতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে এ হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত ১ জুলাইয়ের আগে এই হার ছিল ১২ শতাংশের বেশি।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং বেশি বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং বেশি বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফা ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ, আর বেশি বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
এ ছাড়া ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মেয়াদি হিসাবে তিন বছর পূর্তিতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং বেশি বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। তবে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবের মুনাফার হারে কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকার নিট ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ঋণাত্মক প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। গত অক্টোবর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা।
ইএআর/এমএমকে/এএসএম