গবাদিপশুর মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব : ডিন কার্লেন
গবাদিপশুর পালন, সংরক্ষণ, সরবরাহ ও গবাদিপশু বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা সম্ভব বলে দাবি করেছেন অর্থনীতিবিদ ডিন কার্লেন। গত বৃহস্পতিবার বিজ্ঞানভিত্তিক একটি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেন তিনি।
গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, ভারতের মতো দরিদ্র দেশগুলোতে হাঁস, মুরগী, ভেড়া, ছাগল এবং অন্যান্য পশুপাখি পালন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অন্য সব দেশের দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। গবাদিপশু থেকে কীভাবে টাকা উপার্জন কার যায় এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দারিদ্র্য মিটানো যাবে বলেও গবেষণায় দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ডিন কার্লেন বলেন, এ পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের দারিদ্র্য পুরোপুরি নিরসন করা না গেলেও উল্লেখযোগ্যভাবে দারিদ্র্যের মাত্রা কমবে। তিনি বলেন, দরিদ্র দেশগুলোর দারিদ্র্য দূরীকরণে এর চেয়ে ভালো কোনো পদ্ধতি আছে বলে আমার জানা নেই।
কার্লেন এবং তার সহকর্মীরা মিলে দারিদ্র্যবিরোধী একটি পদ্বতি আবিষ্কার করেছেন। এ পদ্বতির কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য বাংলাদেশে এটির বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইথিওপিয়া, ঘানা, হন্ডুরাস, ভারত, পাকিস্তান ও পেরুতে প্রায় দশ হাজার পরিবার এ পদ্বতির অন্তর্ভূক্ত।
গবেষণায় গ্রামের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষদেরকে মূল্যায়ন করে দেখানো হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের দৈনিক মাথাপিছু আয় ১.২৫ ডলার। পশুসম্পদ সরবরাহ, প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রাথমিক অবস্থায় আর্থিক সাহায্য, টাকা সংরক্ষণসহ নানা বিষয়কে এ পদ্ধতির মূল উপাদান হিসেবে দেখা হয়েছে।
পদ্ধতিটির দেখাশুনা করার জন্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন করে দুটি দলে ভাগ করে তিন বছর পরে তাদের মধ্যে পার্থক্য করা হয়। গবেষণায় যেসব বিষয় মূল্যায়ন করা হয় সেগুলো হলো পারিবারিক খরচ, সম্পদের মূল্য, কতোজন সদস্য রাতে না খেয়ে ঘুমাতে যায়, কতোক্ষণ সময় কাজে ব্যায় হয়, আয় এবং স্বাস্থ্য।
এ পদ্ধতিটি হন্ডুরাস বাদে সবগুলো দেশে কার্যকর হয়েছে কারণ সেখানে একসঙ্গে অনেকগুলো মুরগী নানা রোগে মারা যায়। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিস্টফার বলেন, কার্লেনের পদ্ধতিটি দারিদ্র্য নিরসনে একটি উন্নত মাধ্যম।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকাস্থ ব্র্যাকের উপদেশটা স্মিথ জর্জ বলেন, বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান এ পদ্ধতি চালু করেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বলছে, স্নাতকোত্তরের পরে আত্মকর্মসংস্থান এবং তাৎক্ষণিক চাকরির মাধ্যমে সে দেশে অতি দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব।
এসকেডি/বিএ/আরআই