ন্যায্যমূল্যে মানসম্মত পেইন্টস নিশ্চিত করছে রেইনবো
রেইনবো পেইন্টস এর নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল হাসান
রেইনবো পেইন্টস একটি জনপ্রিয় দেশীয় রঙের ব্র্যান্ড। দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান আরএফএল গ্রুপের জনপ্রিয় রঙের ব্র্যান্ড রেইনবো পেইন্টস আন্তর্জাতিক মানের রং উৎপাদন করে বাজারজাত করে অল্প সময়ের মধ্যে ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। ‘ছড়াও জীবনের রঙ’ স্লোগানে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে রেইনবো পেইন্টস। ন্যায্যমূল্যে মানসম্মত পেইন্ট নিশ্চিত করছে দেশীয় ব্র্যান্ড রেইনবো।
রেইনবো পেইন্টসের অগ্রযাত্রা ও সামনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্র্যান্ডটির নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল হাসান। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক ইসমাইল হোসাইন রাসেল।
জাগো নিউজ: বাংলাদেশের বাজারে রেইনবো পেইন্টসের যাত্রা শুরুর গল্পটা শুনতে চাই?
কামরুল হাসান: বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল উৎপাদনে আরএফএল বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান। আরএফএল গ্রুপ সব সময়ই দেশের আমদানিনির্ভরতা কমাতে কাজ করে যাচ্ছে। বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালে আরএফএলের প্রায় সব ধরনের প্রোডাক্ট আছে। আমরা দেখলাম বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালের পাশাপাশি বাড়ির সৌন্দর্য এবং সুরক্ষায় পেইন্ট একটি বড় ভূমিকা পালন করে। পেইন্ট যেমন একটি বাড়ির সুরক্ষা দেয় ঠিক তেমনি মানুষের রুচিরও বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। আমরা যেহেতু বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালের এ টু জেড বাজারজাত করি তাহলে এই বিল্ডিংয়ের সুরক্ষার জন্য পেইন্ট অবশ্যই দরকার। এ কারণে আমাদের পেইন্ট ব্যবসায় আসা।

আরও পড়ুন>> এশিয়ান পেইন্টসের গুরুত্বপূর্ণ বাজার বাংলাদেশ
২০১৬ সালে রেইনবো পেইন্টসের যাত্রা শুরু হয়। সব শিল্পেই বাংলাদেশ এগিয়েছে। ওষুধ শিল্পের কথা যদি বলেন সেটি কিন্তু একসময় বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির দখলে ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এই ওষুধ শিল্পে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। কিন্তু পেইন্ট ব্যবসায় বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো বেশিরভাগ বাজার দখল করে আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের মনে হয়েছে এই শিল্পখাতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসা উচিত এবং এই ভাবনা থেকেই আমরা রেইনবো পেইন্টস শুরু করলাম। পেইন্ট শুধু ঘরবাড়িতে নয়, বিভিন্ন ইন্ড্রাস্ট্রিতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ যেহেতু এখন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং শিল্পক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি হচ্ছে এজন্য আমরা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পেইন্টেও ব্যাপক জোর দিচ্ছি।
জাগো নিউজ: পেইন্ট মার্কেটে এত বহুজাতিক কোম্পানি থাকার পরও ভোক্তা পর্যায়ে রেইনবো পাইন্টস কেমন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে?
কামরুল হাসান: সচেতন মহলের যারা মনে করেন দেশীয় শিল্পের বিকাশ হওয়া দরকার তাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কারণ দেশীয় শিল্পের বিকাশ হলে কর্মসংস্থান হয়, ন্যায্যমূল্যে পণ্য পাওয়া যায়। অনেকদিন ধরেই অনেকেই অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশের একটি বৃহৎ শিল্পগ্রুপ পেইন্ট ব্যবসায় আসুক। ভোক্তা মহল আমাদের প্রচণ্ডভাবে সহযোগিতা করছে। কারণ তারা জানে প্রাণ-আরএফএল একটি ভালো দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং তারা সাধারণ ক্রেতাদের গত চার দশকের বেশি সময় ধরে সর্বাত্মক সেবা দিয়ে আসছে। এ কারণেই রেইনবো পেইন্টস সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। সবাই কিন্তু এই ব্র্যান্ডকে আপন করে নিচ্ছে, সবাই ভরসা করছে রেইনবো একমাত্র কোম্পানি যারা দেশীয় শিল্পে বড় ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন>> সাশ্রয়ী মূল্যে সেরা ওয়েস্টার্ন পোশাক দেবে ‘ঢেউ’
জাগো নিউজ: বিভিন্ন শিল্পের বাজার বিদেশি কোম্পানিগুলো দখলে রয়েছে। সেই জায়গাটিতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশীয় পণ্য হিসেবে রেইনবো পেইন্ট কীভাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে?
কামরুল হাসান: প্রাণ-আরএফএল বিশ্বাস করে ক্রেতারাই হচ্ছে শক্তি। সুতরাং, ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে সঠিকভাবে সেবা দেওয়ার বিষয়টি আমরা সব সময় মাথায় রাখি। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা সব সময় ক্রেতাদের সেবা দিতে প্রস্তুত থাকি। যে কারণে আমরা অন্য পেইন্ট কোম্পানি থেকে একটু ব্যতিক্রমভাবে শুরু করেছি। আমরা আমাদের রিটেইল শপ চালু করেছি, যেখান থেকে সরাসরি ভোক্তাদের আমরা শুধু সেবা নয়, তাদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। একই সঙ্গে আমাদের পরিবেশকরা খুবই কম পুঁজিতে এই রিটেইল শপের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন।
আমরা বিশ্বাস করি ক্রেতার সন্তুষ্টি সবচেয়ে জরুরি। ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে পারলে, সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে পারলে এবং সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে পারলে দেশি-বিদেশি বিষয়টি আর থাকবে না।
আরও পড়ুন>> রিটার্ন বাধ্যতামূলক করায় কমেছে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু
জাগো নিউজ: কম দামে সবচেয়ে ভালো পণ্যটি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। রেইনবো পেইন্ট সেটি কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে?
কামরুল হাসান: প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ সর্বদা ভোক্তাদের জন্য ‘ভ্যালু ফর মানি’ নিশ্চিত করে। আপনি যদি ১০ টাকা দেন সেই ১০ টাকার পণ্য এবং সেবা আপনি নিশ্চিতভাবেই পাবেন। আমরা রেইনবো পেইন্টের কোয়ালিটিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।
জাগো নিউজ: বর্তমানে রেইনবো পেইন্টস কোন কোন সেগমেন্টে কাজ করছে?
কামরুল হাসান: বর্তমানে আমরা ডেকোরেটিভ, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল, মেরিন, অটোমোটিভ, উড কোটিং এবং কন্সট্রাকশন কেমিক্যাল সেগমেন্টগুলো নিয়ে কাজ করছি। পাশাপাশি আরও নতুন সেগমেন্ট নিয়ে আমাদের টিম কাজ করে যাচ্ছে, শিগগির হয়তো আমরা আমাদের ভোক্তা পর্যায়ে আরও নতুন নতুন পণ্য নিয়ে হাজির হবো।
জাগো নিউজ: আপনাদের এই অগ্রযাত্রার পেছনের কিছু সফলতার গল্প শেয়ার করুন।
কামরুল হাসান: একটি ব্যবসা শূন্য থেকে শুরু করে আজ এই জায়গায় আসার পেছনে অনেক সফলতার গল্প আছে। আমরা জানি পদ্মা সেতু বাঙালি জাতির একটি স্বপ্ন এবং আবেগের জায়গা, আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি এই সেতুর সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা সত্যিই একটি বড় অর্জন। আমরা সফলভাবে পদ্মা সেতুতে রোড-মার্কিং প্রয়োগ করতে পেরেছি যা এখনো দৃশ্যমান। এছাড়াও গত একবছর ধরে আমরা অ্যারোসল পেইন্ট বাংলাদেশে উৎপাদন করে যাচ্ছি এবং রেইনবো পেইন্টসই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ও একমাত্র অ্যারোসল পেইন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
আইএইচআর/এএসএ/জিকেএস