আজ থেকে ২ ঘণ্টার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা
তিন দফা দাবিতে প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি
১১তম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে সারা দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা টানা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন। গত ৫ মে থেকে প্রতি কর্মদিবসে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। শনিবার (১৭ মে) থেকে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকরা।
‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে এ কর্মসূচি পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। শুক্রবার (১৬ মে) রাতে ঐক্য পরিষদের নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। ঈদে টানা ১০ দিন ছুটি ঘোষণা করার ১৭ ও ২৪ মে; দুই শনিবার দেশের সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও আজ শনিবার খোলা থাকছে।
ঐক্য পরিষদের নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘আমরা ৫ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মদিবসে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছি। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ১৬ মে থেকে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি শুরুর কথা ছিল। তবে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তা শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে।’
‘যেহেতু নির্বাহী আদেশে শনিবার প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা থাকছে, সেজন্য আমরা এদিন থেকে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করবো। আশা করি দাবি আদায়ে সহকারী শিক্ষকরা সর্বাত্মকভাবে এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন’, যোগ করেন তিনি।
এদিকে, শুক্রবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের সংগঠনের নেতা শামছুদ্দীন লেখেন, ‘বিদ্যালয় খোলা থাকায় শনিবারও (১৭ মে) সংগঠন ঐক্য পরিষদের প্রেসনোট অনুযায়ী বিদ্যালয় শুরুর সময় থেকে ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন হবে। অর্থাৎ, ঢাকা মহানগরী ছাড়া সব বিদ্যালয় যেখানে ৯টায় বিদ্যালয় শুরু হয়, সেখানে ৯-১১টা। ঢাকা মহানগরীতে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
গত ২৪ এপ্রিল গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে সরকারের কাছে দাবি-দাওয়া জানিয়েছিলেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতারা। সেখানে তারা ৪ মের মধ্যে দাবি পূরণ না করা হলে ৫ মে থেকে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
ঘোষণা অনুযায়ী ৫ থেকে ১৫ মে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। এরপর ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দুই ঘণ্টা, ২১-২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি করবেন শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নে সম্প্রতি ঢাকায় কয়েক দফা সমাবেশ করেছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটি সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১২তম গ্রেড বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। তবে তা সংস্কার করে এবার ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
তিন দফা দাবি হলো-
১. সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ;
২. ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন; এবং
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে চার লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকদের বর্তমান বেতন গ্রেড ১১তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।
এএইচ/এসআর
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন স্থগিত, রোববার থেকে পরীক্ষা
- ২ আন্দোলন করা অসংখ্য প্রাথমিক শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় বদলি
- ৩ পরীক্ষা না নেওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষকের মাথা ফাটালেন অভিভাবকরা
- ৪ অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগে নতুন শর্ত, তৃতীয় বিভাগ থাকলেই অযোগ্য
- ৫ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যারিয়ার ফেয়ার, অংশ নিলো ৬০ প্রতিষ্ঠান