ঈদের ব্যস্ততায় কেমন আছেন দিনমজুর শ্রমিকরা

সানজানা রহমান যুথী
ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব, নতুন পোশাক আর প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো। শহরের বড় বড় মার্কেট, রাস্তা-ঘাট, এমনকি গঞ্জপাড়াও তখন সরগরম হয়ে ওঠে ঈদ আনন্দে। চারপাশে তখন উৎসবের রং, আলো আর ভীড়ের মধ্যে থাকে একধরনের ব্যস্ত উচ্ছ্বাস। তবে এই উৎসবের পেছনে যাঁরা দিনরাত ঘাম ঝরান—সেই দিনমজুর মানুষদের কথা খুব কমই আলোচনায় আসে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
দিনমজুরদের কাজের পরিধি বিশাল। নির্মাণ শ্রমিক, রিকশাচালক, ঠেলাগাড়িচালক, বাসা-বাড়ির কাজের মানুষ, কুলি, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি থেকে শুরু করে হোটেল-রেস্তোরাঁর খুঁটিনাটি কাজের সেবাদাতারাও এর অন্তর্ভুক্ত। ঈদের আগে এসব খাতে কাজের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। বাজারে কেনাকাটার ভীড়, নির্মাণ প্রকল্প শেষ করার তাড়া, ঘরবাড়ি পরিষ্কারের কাজ সবখানেই দরকার পড়ে এই মানুষগুলোর।
শহরের রাস্তায় ঈদের আগের দিনগুলোতে দেখা যায়, ভোর থেকে রাত পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে চলেছেন একজন চালক। তার কপালে ঘাম, শরীরে ক্লান্তি তবুও মুখে একধরনের আশা। কারণ ঈদের আগে একটু বেশি রোজগার হলে হয়তো ছেলেমেয়ের জন্য নতুন জামা-কাপড় কেনা যাবে। একজন নির্মাণশ্রমিক জানালেন, "ঈদের আগে অনেক কাজ পাই, তবে শরীর ভেঙে যায়। আয়টা একটু বেশি হয়, কিন্তু সেই টাকা দিয়েই তো সংসারের চাহিদা মেটাতে হয়।"
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
তবে কাজ থাকলেও সবসময় তার যথার্থ মূল্য মেলে না। অনেক মালিক ঈদের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে দিনমজুরদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করিয়ে কম মজুরি দেন। অনেকে আবার ঈদের বোনাসের আশায় দিনরাত খেটে মরেন, কিন্তু শেষমেশ হতাশ হন। শ্রমের সঠিক মূল্য না পেলে সেই আনন্দভাগ কি তাদের হয়?
বিজ্ঞাপন
ঈদের ব্যস্ততায় দিনমজুরদের জীবন চলে একরকম যুদ্ধের মতো। তবুও তারা খুশি, কারণ এই ব্যস্ততাই হয়তো এনে দেবে একটু আনন্দ। হয়তো একটি নতুন জামা, কিংবা একটু ভালো খাবার। আর তার মধ্যেই তারা খুঁজে নেন ঈদের আনন্দ।
এই বাস্তবতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় ঈদ শুধু ধনী-সচ্ছল মানুষের উৎসব নয়। এই উৎসবে দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষেরও সমান অধিকার আছে। আমাদের সমাজ, সরকার এবং প্রত্যেকের উচিত এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো। ঈদের আনন্দ হোক সবার জন্য—সেইসব মানুষের জন্যও, যারা নিজের আনন্দ ভুলে আমাদের আনন্দ নিশ্চিত করে।
এমআইএইচ/এমএস
বিজ্ঞাপন