পাকিস্তানের বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র
চলতি বছরের মার্চে পাকিস্তানের ‘জাফর এক্সপ্রেস’ নামক ট্রেন ছিনতাই করে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি/ ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলও) ও তাদের সশস্ত্র শাখা মাজিদ ব্রিগেডকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো এই গোষ্ঠী ও তাদের সশস্ত্র শাখার অর্থায়ন বন্ধ করা। এই পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলে দাবি রুবিওর।
২০২৪ সালে করাচি বিমানবন্দর ও গোয়াদার বন্দর কমপ্লেক্সের কাছে হামলা এবং গত মার্চে জাফর এক্সপ্রেসে ট্রেন ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করে বিএলএ। অন্যদিকে, পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে মাজিদ ব্রিগেড। ২০০৬ সালে বিএলএকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান সরকার।
জানা গেছে, বেলুচিস্তানে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ফেব্রুয়ারিতে পুরো পাকিস্তানে যে কয়টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, তার ৬২ শতাংশই বেলুচিস্তানে। এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট প্রদেশটিতে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে হামলা চালান বিদ্রোহীরা। এতে সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ তিনজন নিহত হন। এই ঘটনায় পাল্টা অভিযানে নিহত হয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চার সদস্য।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য বেলুচিস্তান ভৌগোলিক আয়তনের দিক থেকে দেশটির বৃহত্তম রাজ্য বা প্রদেশ। এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবিরল, সল্পোন্নত ও দারিদ্র্যপীড়িত রাজ্য। পুরো পাকিস্তানের জনগণ যেখানে ২৪ কোটি, সেখানে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বেলুচিস্তানের জনসংখ্যা মাত্র দেড় কোটি।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে বেলুচিস্তানে, যাকে বিচ্ছিন্নতাবাদ বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও সামরিক বাহিনী। পাকিস্তানের এই রাজ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে নিয়মিতই সংঘাত হয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের।
বেলুচিস্তান খনিজ সম্পদে বেশ সমৃদ্ধ। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও দেশটির মিত্র চীন যৌথভাবে এই সম্পদ উত্তোলন করে। তবে বেলুচ স্বাধীনতাকামীদের অভিযোগ, বেলুচিস্তানের এই সম্পদ লুট করছে ইসলামাবাদ ও বেইজিং। কারণ এই রাজ্য থেকে ব্যাপক আয় হলেও, এখানকার উন্নয়নে মনোযোগ নেই কেন্দ্রীয় সরকারের।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ