ঐক্য ও শান্তির বার্তা নিয়ে তুরস্ক-লেবানন সফরে যাচ্ছেন পোপ লিও
পোপ লিও/ ছবি: এএফপি
ছয় দিনের জন্য তুরস্ক ও লেবানন সফরে যাবেন ভ্যাটিকান সিটিতে সদ্য নির্বাচিত পোপ লিও চতুর্দশ। এ পদে আসীন হওয়ার পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় দিনের বিদেশ সফরে ঐক্য ও শান্তির বার্তা প্রচার করবেন এ ধর্মীয় নেতা।
পোপ নির্বাচনের পর তার প্রথম উক্তি ছিল,তোমাদের সবার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। তার এ সফর সেই বার্তার প্রতিধ্বনি বলেই অনেকে মনে করছেন।
পোপদের বিদেশ সফরকে ভ্যাটিকানের ‘সফট পাওয়ার’-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ধরা হয়। এসব সফরে তারা স্বাগতিক দেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলিত হন এবং এর মাধ্যমে আঞ্চলিক ইস্যুগুলোতে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হয়।
তুরস্ক মূলত মুসলিম-প্রধান দেশ হলেও পোপ লিও ইস্তানবুল সফরে গিয়েছেন ভিন্ন কারণে। তুরস্কে অবস্থান করছেন ইকিউমেনিক্যাল প্যাট্রিয়ার্ক বার্থলোমিউ (অর্থডক্স চার্চের আধ্যাত্মিক নেতা)। খ্রিষ্টান ধর্মের পূর্ব ও পশ্চিম শাখার বিচ্ছেদ (দ্য গ্রেট স্কিজম) হয়েছিল ১০৫৪ সালে। এর ক্ষত মেটাতে গত কয়েক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে পোপদের তুরস্ক সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
কার্ডিনাল মাইকেল ফিটজজেরাল্ড সিএনএনকে বলেন, তুরস্কে যাওয়া একটি মুসলিম-প্রধান দেশে সফর হলেও এর উদ্দেশ্য মূলত খ্রিষ্টান ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ জোরদার করা।
খ্রিষ্টধর্মের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা—৩২৫ খ্রিষ্টাব্দের নীত্সিয়া কাউন্সিল গঠন। এ কাউন্সিলের ১,৭০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পোপ। এই কাউন্সিলেই রচিত হয়েছিল ‘নিকিন ক্রিড’ যা এখনো ক্যাথলিক, অর্থডক্স, অ্যাংলিকানসহ বিভিন্ন চার্চে পাঠ করা হয়।
তুরস্কে অবস্থানকালে পোপ ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত ব্লু মসজিদ পরিদর্শনের কথা থাকলেও হায়া সোফিয়া পরিদর্শন করবেন না।
রোববার(৩০ নভেম্বর) লেবাননে পৌঁছাবেন পোপ লিও। সেখানে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, আন্তঃধর্মীয় জমায়েত ও বৈরুত ওয়াটারফ্রন্ট পরিদর্শনে যাবেন। এরপর ২০২০ সালে হওয়া বৈরুত বন্দর বিস্ফোরণের স্থানে প্রার্থনা করবেন পোপ।
লেবানন বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থানের দেশ। এখানে ১২টি খ্রিষ্টান সম্প্রদায় রয়েছে। পোপ মারোনাইট চার্চের কেন্দ্র সেন্ট মারনের মঠে গিয়ে সেন্ট শারবেল মাখলুফের সমাধিতে প্রার্থনা করবেন। লেবাননে শারবেল বহু ধর্মের মানুষের মিলন ঘটানোর জন্য পরিচিত।
আধুনিক যুগে পোপদের বিদেশ সফর শুরু হয় পল ষষ্ঠের মাধ্যমে ১৯৬৪ সালে। পোপ লিও ইতালির রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা আইটিএ এয়ারওয়েজের বিমানে ভ্রমণ করবেন। তার সঙ্গে থাকবেন প্রায় ৮০ জন সাংবাদিক ও ভ্যাটিকানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
সূত্র : সিএনএন
কেএম