ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ন্যাটো

জার্মানিতে নতুন সামরিক বিলের বিরুদ্ধে হাজারো ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:২৭ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জার্মানির নতুন সামরিক বিলের প্রতিবাদে বার্লিনের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার ছাত্র-জনতা। ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে সামরিক শক্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বিলটি পাস করেছে জার্মান সংসদ বুন্ডেসট্যাগ। এ ঘটনায় জার্মানজুড়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) জার্মান সংসদে অনুমোদিত এই আইন ইউরোপে প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জার্মানির নতুন সামরিক সেবা আইন বাতিলের দাবিতে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দেশজুড়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেছে। সামরিক সেবার বিরুদ্ধে স্কুল ধর্মঘট শীর্ষক ব্যানারে আয়োজিত এ বিক্ষোভ জার্মানির ৯০টিরও বেশি শহরে অনুষ্ঠিত হয়—যার মধ্যে রয়েছে বার্লিন হামবুর্গ, বখুম, বিলেফেল্ড, মুনস্টার, কোলোন, ডুসেলডর্ফ ও স্টুটগার্ট।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই ন্যাটো মিত্ররা সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত জুন মাসে ন্যাটোর সমষ্টিগত প্রতিরক্ষায় বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘আয়রনক্ল্যাড’ অঙ্গীকার করে ন্যাটোর ৩২ সদস্যবিশিষ্ট জোটের নেতারা।

এতে ন্যাটো সদস্যদেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিটি দেশ তাদের জাতীয় জিডিপির সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ও সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় করবে।

জোটের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, বর্তমান বৈশ্বিক উত্তেজনা, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, সাইবার হুমকি ও ইউরোপের নিরাপত্তা পরিবেশের দ্রুত পরিবর্তন বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে।

ওই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে জার্মানির নতুন আইনে, ২০৩৫ সালের মধ্যে সেনাবাহিনী বা বুন্ডেসভেয়ার-এর সদস্য সংখ্যা এক লাখ ৮৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৬০ হাজারে করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। পাশাপাশি রিজার্ভ বাহিনীতে এ সংখ্যা ২ লাখ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বিলে দুটি নিয়োগ পদ্ধতি রাখা হয়েছে। আকর্ষণীয় সুবিধাসহ স্বেচ্ছাসেবী সামরিক সেবা, এবং প্রয়োজনে সংসদের ভোটে বাধ্যতামূলক নিয়োগ (কনস্ক্রিপশন) সক্রিয় করার ক্ষমতা।

বিল অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারির পর জন্ম নেওয়া সব পুরুষকে মেডিকেল মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ১৮ বছর পূর্ণ করা পুরুষ ও নারী উভয়েই সামরিক সেবায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা জানাতে পারবে। তবে পুরুষদের জন্য জবাব দেওয়া বাধ্যতামূলক, নারীদের জন্য নয়।

বুন্ডেসটাগে ভোটে এর পক্ষে ৩২৩ জন, ২৭২ জন বিপক্ষে, এবং ১ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। বিলটি এখন জার্মানির উচ্চকক্ষ বুন্ডেসরাটে পাঠানো হবে, যেখানে এই মাসের শেষ দিকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। আইনটি কার্যকর হলে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স, ইতালি, বেলজিয়ামসহ নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলোও সামরিক নিয়োগ বাড়াচ্ছে।

জার্মানির সেনাপ্রধান কারস্টেন ব্রেয়ার সতর্ক করে বলেছেন—রাশিয়া আগামী পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে ন্যাটো দেশগুলোতে হামলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

ফ্রান্স সম্প্রতি নতুনভাবে সীমিত আকারে সামরিক সেবা ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, বিপদ এড়ানোর একমাত্র উপায় হলো তার জন্য প্রস্তুত থাকা।

সূত্র : আল-জাজিরা

কেএম