ইরানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, প্রকাশ্যে সহায়তার ঘোষণা ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার
ইরানের রাজধানী তেহরান ও মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইসফাহানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও মুদ্রার মান অবনতির প্রতিবাদে এই আন্দোলন শুরু হয়। এদিকে, এই বিক্ষোভে প্রকাশ্যে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।
জানা গেছে, টানা তৃতীয় দিনের মতো এই বিক্ষোভ চলছে। শিক্ষার্থীদের আগে বিক্ষোভে নামেন স্থানীয় দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা। এরপর রাজপথে নামেন শিক্ষার্থীরা, যা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে।
শ্রমিক আন্দোলন সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা ইলনা জানিয়েছে, তেহরানের বেহেশতি, খাজেহ নাসির, শরিফ, আমির কবির, সায়েন্স অ্যান্ড কালচার, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসফাহান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে একযোগে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
একই সময়ে দেশজুড়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো অর্থনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ইরানের বিভিন্ন শহরে মানুষ রাস্তায় নেমে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও ক্রমেই অবনতিশীল জীবনমানের প্রতিবাদ জানান।
বিক্ষোভকারীরা এটিকে দেশব্যাপী গণঅভ্যুত্থান আখ্যা দিয়ে আরও মানুষকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে, দোকানদারদের ব্যবসা বন্ধ রেখে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় তেহরানের ঐতিহ্যবাহী গ্র্যান্ড বাজার বন্ধ থাকে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে বিরল অর্থনৈতিক অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এই আন্দোলন রাজধানীর গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে। কেরমানশাহসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। কিছু এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ইরানের ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আগে ক্ষমতাসীন পাহলভি রাজবংশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে স্লোগান দিতেও শোনা গেছে।
পরিস্থিতি সামলাতে তেহরান প্রদেশের কর্তৃপক্ষ পূর্ণাঙ্গ লকডাউন ঘোষণা করে। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, তীব্র শীত ও জ্বালানি স্থিতিশীলতা রক্ষার কারণ দেখানো হলেও সমালোচকরা এটিকে চলমান আন্দোলন দমনের কৌশল হিসেবে দেখছেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরানের গভীর অর্থনৈতিক সংকট জনঅসন্তোষ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অনেক জায়গায় বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ও বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ তাদের সরকারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফার্সি ভাষায় একটি বার্তা প্রকাশ করে। সেখানে ইরানিদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং দাবি করা হয়, বিক্ষোভকারীরা শুধু দূর থেকে নয়, মাঠপর্যায়েও সমর্থন পাচ্ছেন।
সূত্র: এএফপি, আই ২৪ নিউজ
এসএএইচ