ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

বুয়েট শিক্ষার্থী সানির মৃত্যু

তিন বছরেও কারণ জানতে পারেনি পরিবার

মিনহাজুল ইসলাম | প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৫

তদন্তে এখনো মেলেনি হত্যার প্রমাণ
ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল সানির মায়ের
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হলে পরবর্তী পদক্ষেপ: সানির ভাই

তিন বছর আগে ঠিক এই দিনে (১৪ জুলাই) বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানি। ঘটনার পরদিন ঢাকার দোহার থানায় মামলা করেন তার বড় ভাই হাসানুজ্জামান রনি। সেদিন দোহারের মৈনটঘাট থেকে সানির মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের ছাত্র সানি তার বন্ধুদের সঙ্গে দোহারের মৈনটঘাটে ঘুরতে গিয়ে পদ্মা নদীতে গোসলে নেমেছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া ১৫ বন্ধুকে আসামি করা হয়। এরই মধ্যে মামলার তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। অথচ আজও উন্মোচিত হয়নি সানির মৃত্যুর রহস্য। তার মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নাকি হত্যা তা এখনো জানতে পারেনি পরিবার। এখন পর্যন্ত তদন্তেও মেলেনি হত্যার কোনো প্রমাণ। মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৮ জুলাই দিন ধার্য রয়েছে।

এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সানির নিখোঁজ হওয়ার স্থানে ছিল না কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা, ছিল না প্রত্যক্ষদর্শীও। তদন্ত চলাকালে মোবাইল ফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদনেও মেলেনি হত্যার প্রমাণ। ফলে মামলাটির তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের সম্ভাবনা প্রবল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, মামলার ১৫ আসামির কেউই আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেননি। তারা সবাই এখন জামিনে। তাদের দাবি, গোসল করতে নেমে সানি পা পিছলে পানিতে ডুবে মারা গেছেন।

সানি পানিতে ডুবে শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তাকে হত্যা করা হয়েছে- এমন কোনো বিষয় সেখানে উঠে আসেনি। ফলে তাকে পানিতে ফেলে বা শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে- মর্মেও কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলছে, সানি পানিতে ডুবে শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তাকে হত্যা করা হয়েছে- এমন কোনো বিষয় সেখানে উঠে আসেনি। ফলে তাকে পানিতে ফেলে বা শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে- মর্মেও কোনো প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকার দোহার নৌ থানার উপ-পরিদর্শক নাসির উদ্দীন জাগো নিউজকে বলেন, আমি মাত্র চার মাস এই মামলার দায়িত্ব নিয়েছি। এটি একটি জটিল ও আলোচিত ঘটনা। তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তবে সময় লাগবে। ফরেনসিক রিপোর্ট হয়েছে অনেক আগেই। মূল প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দিতে সময় লাগবে।

এদিকে সানির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তার পরিবার। সানির পরিবারে সানি ছাড়া ছিল তার মা ও বড় ভাই হাসানুজ্জামান রনি। রনি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি বলেন, আমাদের পরিবার এখনো স্বাভাবিক হয়নি। মা ভীষণ ভেঙে পড়েছেন। সানি ছোট ছেলে হওয়ায় সবচেয়ে বেশি আদরের ছিল। সানি যেসব খাবার পছন্দ করতো, মা সেসব খাবার খায় না এখন। ঠিকমতো ভাতও খেতে পারে না। ছেলেকে নিয়ে মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

আমরাও জানি না এটা দুর্ঘটনায় মৃত্যু নাকি হত্যা। ১৫ জন বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গেলো, সবাই ফিরে এলো অথচ ও আর ফিরলো না। এখানেই তো আমাদের সন্দেহ। পুলিশ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করলে আমরা আইনগতভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।

সানির মৃত্যুর বিষয়ে রনি বলেন, আমরাও জানি না এটা দুর্ঘটনায় মৃত্যু নাকি হত্যা। ১৫ জন বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গেলো, সবাই ফিরে এলো অথচ ও আর ফিরলো না। এখানেই তো আমাদের সন্দেহ। পুলিশ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করলে আমরা আইনগতভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।

আলোচিত এ মামলার ১৫ আসামি হলেন শরীফুল হোসেন, শাকিল আহম্মেদ, সেজান আহম্মেদ, রুবেল, সজীব, নুরজামান, নাসির, মারুফ, আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, নোমান, জাহিদ, এটিএম শাহরিয়ার মোমিন, মারুফুল হক মারুফ ও রোকনুজ্জামান ওরফে জিতু। আসামিরা সবাই নিহত সানির বন্ধু।

মামলার বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রণব কুমার দে বলেন, এটা কোনো হত্যাকাণ্ড নয়। পা পিছলে নিচে পড়ে মারা গেছেন সানি। আসামিরা নির্দোষ। আশাকরি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

বিজ্ঞাপন

এমআইএন/বিএ/এমএস

বিজ্ঞাপন