কর্মকর্তাদের গ্রেফতার প্রসঙ্গ
সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে: চিফ প্রসিকিউটর
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, ছবি: সংগৃহীত
গুম ও জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামিদেরকে (সেনা কর্মকর্তা) গ্রেফতার করে আদালতে (ট্রাইব্যুনালে) হাজির করার ব্যাপারে সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার না করারও আহ্বানও জানান তিনি।
বুধবার (২২ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের দুই মামলা ও জুলাই-আগস্টে রামপুরায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
এসময় চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আজকে যাদেরকে উপস্থিত করা হয়েছিল তাদেরকে গ্রেফতারের ব্যাপারে ও বিচারের সোপর্দ করার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেমন কাজ করেছেন, তেমনিভাবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের রক্ষক হিসেবে আমরা যাদেরকে মনে করি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, তারা এই আদালতের (ট্রাইব্যুনালের) বিচারিক প্রক্রিয়াকে সাহায্য করেছেন। তারা (সেনাবাহিনী) ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ল’ অফ দ্য ল্যান্ডের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের সব সমর্থন থাকবে। তারা সেই সমর্থন আমাদেরকে দিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়েছেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আসামিদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। সুতরাং দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে যারা অপপ্রচার করেন, তাদেরকে বলবো অপপ্রচার করবেন না। তারা জুলাই-আগস্টে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞের সময় ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তা জাতি স্মরণ করে। এখন গুমের বিচারেও সহযোগিতা করছে।
আরও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধ: ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে সেনা কর্মকর্তাদের
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের দুই মামলা ও জুলাই-আগস্টে রামপুরায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক আরেক মামলায় গ্রেফতার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
তারা হলেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম। ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিকে, এই তিন মামলার পলাতক অপর আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আজকের আদেশের পর সকাল ১০টায় গ্রেফতার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারের উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল থেকে বিশেষ প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেনকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সেনানিবাসে যে সাবজেল ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে তাদের নেওয়া হবে বলে জেনেছি।’
ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউসন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।
এর আগে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ জেলের একটি বিশেষ প্রিজনভ্যানে করে সাধারণ পোশাকে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালের আনার প্রেক্ষাপটে ট্রাইব্যুনালকে ঘিরে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএনের বিপুল সংখ্যক সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়া রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, কাকরাইল মোড়সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনী, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান দেখা গেছে।
এফএইচ/এসএনআর/এএসএম
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ হাদির মৃত্যুতে দেশ এক সাহসী কণ্ঠস্বর হারালো: প্রধান বিচারপতি
- ২ নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে রিট নিষ্পত্তিতে হাইকোর্টের বেঞ্চ নির্ধারণ
- ৩ নির্দোষ দাবি করে ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার চাইলেন ৩ সেনা কর্মকর্তা
- ৪ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ১ ও ২ এপ্রিল
- ৫ বিচার বিভাগের স্থিরতা হতে পারে জাতির নির্ভরযোগ্য স্থিতিশীলতার উৎস