বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে অসামরিক পণ্য উৎপাদন বন্ধে নোটিশ
বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ)/ছবি: সংগৃহীত
সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সামরিক বাহিনীর অধীনস্থ বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) অসামরিক পণ্য উৎপাদন বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান জনস্বার্থে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, বাণিজ্য সচিব, বিএমটিএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়, আগামী সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে দৃশ্যমান ও কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে মাহমুদুল বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা স্বার্থের সুরক্ষা এবং দেশের বেসরকারি অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে নোটিশটি দেওয়া হয়েছে।
এ আইনজীবী বলেন, দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও শক্তিশালী করার মহান ব্রত নিয়ে বিএমটিএফ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মূল ম্যান্ডেট বা সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব হলো সামরিক সমরাস্ত্র, সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রতিষ্ঠানটি তার মৌলিক লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে বর্তমানে চেয়ার, টেবিল, বিছানা, আলমারি, জুতা, ডিটারজেন্ট পাউডার ইত্যাদি বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মাহমুদুল বলেন, রাষ্ট্রের একটি কৌশলগত সামরিক প্রতিষ্ঠানের এমন বাণিজ্যিকীকরণ একদিকে যেমন জাতীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতার সঙ্গে আপস করার শামিল, অন্যদিকে এটি দেশের সাধারণ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের অস্তিত্বের জন্যও এক বড় হুমকি।
নোটিশে বলা হয়, বিএমটিএফের মতো একটি সামরিক প্রতিষ্ঠান যখন তার মেধা, জনবল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করে সাধারণ ব্যবসায় লিপ্ত হয়, তখন তা ১৯৫২ সালের আর্মি অ্যাক্ট এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা করে। সমরাস্ত্র গবেষণায় মনোনিবেশ না করে মুনাফাভিত্তিক বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়া রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতি চরম উদাসীনতার পরিচায়ক।
অর্থনীতির ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে নোটিশে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় তহবিল, কর সুবিধা ও লজিস্টিক আনুকূল্য নিয়ে একটি সামরিক প্রতিষ্ঠান যখন সাধারণ বাজারে পণ্য বিক্রি শুরু করে, তখন দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি বেসরকারি ব্যবসায়ীদের পক্ষে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটি ‘প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২’-এর সরাসরি লঙ্ঘন এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতির পরিপন্থি। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের এমন অন্যায্য বাণিজ্যিক আগ্রাসনের ফলে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।
এমন অবস্থায় আইনি নোটিশে দাবি জানানো হয়, অবিলম্বে বিএমটিএফকে সব প্রকার অসামরিক বাণিজ্যিক বা বেসামরিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে তার মূল ম্যান্ডেট অর্থাৎ সামরিক অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে পূর্ণ মনোনিবেশ করতে হবে।
এফএইচ/একিউএফ/এমএস