মানবতাবিরোধী অপরাধ
ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতজনকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সাত আসামিকে আগামী ৮ জানুয়ারির মধ্যে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বাংলা ও ইংরেজি পৃথক দুই জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। ওই সময়ের মধ্যে তারা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার হবে বলে প্রসিকিউশন জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান।
এর আগে ১৮ ডিসেম্বর প্রসিকিউশনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে ওবায়দুল কাদেরসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি নিয়ে ওইদিন ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
আসামিদের গ্রেফতার করে গড ২৯ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন
কাদেরসহ ৭ আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
২৮ জানুয়ারির মধ্যে ময়মনসিংহে তিন হত্যার প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
প্রসিকিউশন থেকে জানানো হয়েছে, ওবায়দুল কাদের সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন। জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে, সেই গণহত্যার পরিকল্পনা, নির্দেশ এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তার দলের অন্য নেতারা বিশেষ করে বাহাউদ্দিন নাছিম, মোহাম্মদ আলী আরাফাত পুরো প্রক্রিয়ায় সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে এই হত্যাকাণ্ডকে ফ্যাসিলিটেট করেছেন। ওই সময় পুলিশ বা অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সরাসরি আক্রমণে অংশগ্রহণ করেছেন এবং নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে ছাত্রজনতার আন্দোলন দমনে তারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, অত্যাচার করেছেন, অঙ্গহানি করেছেন।
প্রসিকিউশন জানায়, এসব কারণে ওবায়দুল কাদেরকে এখানে কমান্ড রেসপনসিবিলিটির কারণে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই শীর্ষস্থানীয় নেতা। তারা নিজ নিজ অর্গানাইজেশনের সেই কমান্ড রেসপনসিবিলিটির কারণে তাদের আসামি করা হয়েছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর এই সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। একই দিন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। পরে এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
শুনানিতে সাত আসামির আলাদা আলাদা অভিযোগ পড়ে শোনান তামিম। এর মধ্যে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তিনটি অভিযোগ রয়েছে সেগুলো হলো- নির্দেশ, প্ররোচনা ও উসকানি। বাকিদেরও দায় তুলে ধরা হয়।
সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন এই প্রসিকিউটর। পরে এ সম্পর্কিত আইন পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর অভিযোগ আমলে নেওয়ার পাশাপাশি সবার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল-২।
এফএইচ/কেএসআর