সাকার আইনজীবী ফখরুলকে অব্যাহতি দিল ট্রাইব্যুনাল
নিঃর্শত ক্ষমা প্রার্থনা করায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর মামলার রায়ে ঘোষণার জন্য আজ দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তবে তার আগেই ২০১৫ সালের ৭ মার্চ তিনি আদালত অবমাননার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
সোমবার ট্রাইব্যুনালে ব্যারিস্টার ফখরুল উপস্থিত ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান। অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তার আগে গত ২৩ ডিসেম্বর আদালতে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম নিজেই শুনানি করেছেন। এর আগে মামলায় ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম আল ফেসানী।
ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, আমি আদালতের কাছে কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলাম। যদিও আমি আদালতে স্কাইপির বিষয়ে প্রশ্ন তোলে জবাব চাওয়ার যে আবেদন করা হয়েছিল সেটা আমার ছিল না। তারপরেও যেহেতু আদালত বিষয়টি অবমানা মনে করেছেন সেহেতু আমি ক্ষমা চেয়েছি। তার আগে কমপক্ষে ৭ বার এই আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য করার পর তা পেছানো হয়।
সাকা চৌধুরীর মামলার রায়ের খসড়া ফাঁস করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পরে ২২ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। পরের দিন ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম আদালতে হাজির হয়ে নিজের মামলার শুনানি করেন।
২০১৩ সালের ১৪ জানুয়ারি ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপ নিয়ে বিচারিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে আবেদন করার কারণে তার প্রতি শোকজ নোটিশ জারি করেছিলেন তৎকালীন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে ওইদিন তার বিরুদ্ধে রুলও জারি করা হয়। রুলে ট্রাইব্যুনালের বিচারকি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে জানতে চান। ২০১৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রুলের জবাব দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। বার বার সময় আবেদনের কারণে শুনানি পিছিয়ে যায়।
ব্যারিস্টার ফখরুল একটি আবেদনে ট্রাইব্যুনাল-১ এর সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের সঙ্গে অন্য সব বিচারপতিরা যুক্ত আছেন কিনা তা জানতে চেয়েছিলেন। প্রবাসী আইন বিশেষজ্ঞ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি কথোপকথন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকাসহ বেশ কিছু পত্রিকায় প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় তিনি ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিচারিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং আদালত অবমাননা প্রশ্নে কারণ দর্শাতে (শোকজ) নোটিশ জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদালতের সঙ্গে অসৎ আচরণের অভিযোগে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ জারি করেছিল ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ফাঁসি কার্যকর হওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর থেকে আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারামুক্ত হয়েছেন।
এফএইচ/জেডএইচ/আরআইপি
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ হাদির মৃত্যুতে দেশ এক সাহসী কণ্ঠস্বর হারালো: প্রধান বিচারপতি
- ২ নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে রিট নিষ্পত্তিতে হাইকোর্টের বেঞ্চ নির্ধারণ
- ৩ নির্দোষ দাবি করে ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার চাইলেন ৩ সেনা কর্মকর্তা
- ৪ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ১ ও ২ এপ্রিল
- ৫ বিচার বিভাগের স্থিরতা হতে পারে জাতির নির্ভরযোগ্য স্থিতিশীলতার উৎস