পুরুষের স্টাইলিশ হওয়ার ৯ সাশ্রয়ী কৌশল

স্টাইলিশ হতে হলে কি সত্যিই অনেক টাকা খরচ করতে হয়? এই প্রশ্নটা পুরুষদের মাথায় ঘোরে বেশি। বাজারে পুরুষদের জন্য ফ্যাশন নিয়ে যতটা না আলোচনা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি হয় নারীদের ঘিরে। অথচ পুরুষরাও চান স্মার্ট ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে। তারাও স্টাইলিশ অনুভব করতে চান।

তাই জেনে রাখুন, ফ্যাশন মানেই ব্র্যান্ড নয়। ফ্যাশন মানেই অনেক খরচ নয়। বরং ফ্যাশন মানে হচ্ছে – আপনি কীভাবে নিজেকে তুলে ধরছেন এবং সেটা করতে গিয়ে আপনি কতটা সচেতন, স্মার্ট ও সৃজনশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন। তাহলে চলুন যেনে নেওয়া যাক পুরুষরা কীভাবে অল্প খরচে স্টাইলিশ হতে পারেন-

১. বেসিক পোশাকে ফোকাস করুন
সব সময় নতুন জামা-কাপড় কেনার দরকার নেই। বরং আপনি আপনার আলমারিতে কিছু বেসিক পোষাক রাখুন। যেমন, ভালোভাবে ফিট হয় এমন এক জোড়া জিন্স, সাদা ও কালো টি-শার্ট, কয়েকটি সেমি-ফর্মাল শার্ট। এর মধ্যে সাদা, নেভি ব্লু ও প্যাস্টেল রঙের শার্ট রাখতে পারেন। এছাড়াও রাখতে পারেন একটি ভালো মানের স্নিকার্স। এগুলো আপনি অল্প টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।

এইসব জিনিস দিয়েই আপনি একাধিক স্টাইল বানিয়ে ফেলতে পারেন। এসবের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এই স্টাইলগুলো কখনোই আউটডেটেড অর্থাৎ পুরনো হয় না।

২. লোকাল মার্কেট ঘেঁটে দেখুন
ঢাকার নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট, মিরপুরের নান্নু মার্কেট কিংবা চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার, খুলনার রূপসা – এসব জায়গায় চোখ রাখলে আপনি অবিশ্বাস্য ভালো মানের জামা-প্যান্ট পেয়ে যাবেন খুবই কম দামে। অনেক সময় ব্র্যান্ডেড ও এক্সপোর্টের পোশাক মাত্র ৫০০–৭০০ টাকায় মিলবে।

এক্ষেত্রে আপনাকে খোঁজ নিতে হবে, সময় দিতে হবে। তাহলেই, ব্যাস – স্মার্ট আপনি!

৩. নিজের স্টাইল নিজেই বানান
পুরনো জামার হাতা কেটে স্লিভলেস বানিয়ে ফেলুন। পুরনো জিন্সে একটু ডিজাইন করে দিন বা নিজে প্যাচ লাগিয়ে রোডি লুক নিন। অথবা প্যান্ট কেটে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টের লুক দিন।

একটা সাদা টি-শার্টে হ্যান্ড পেইন্ট করে নিন নিজের পছন্দের ডিজাইন – তা হোক জেমস-এর গানের লাইন, কিংবা কারো নাম। এগুলো একেবারে ইউনিক লুক তৈরি করে, যা আপনার রুচি ও পরিচয় তুলে ধরে।

৪. অ্যাক্সেসরিজে আনুন বৈচিত্র
পুরুষরা সাধারণত খুব বেশি অ্যাক্সেসরিজ ব্যবহার করেন না। কিন্তু একটা ঘড়ি বা স্মার্টওয়াচ, একটা সানগ্লাস, কিংবা একটা মিনিমাল ব্যান্ড বা ক্যাপ আপনার লুককে পুরো বদলে দিতে পারে।

বিশেষ করে কালো রঙের ঘড়ির সঙ্গে হাফ শার্ট আপনাকে ক্লাসি লুক এনে দিবে। সাদা স্নিকার্স-এর সঙ্গে ডেনিম আপনাকে ক্যাজুয়াল কুল লুক দিবে। এছাড়া ক্যাপ, সানগ্লাসের সঙ্গে একটা হোয়াইট টি-শার্ট আপনাকে একদম হিপস্টার ভাইব এনে দিবে।

সব কিছু না থাকলেও, ২ থেকে ৩ টা অ্যাক্সেসরিজ বেছে রাখুন, যেন দরকারে কাজে আসে।

৫. ডিসকাউন্টে কিনুন
স্টাইল করবেন বা লুক চেঞ্জ করবেন বলে যে এখনই কেনাকাটা করতে যাবেন, ব্যাপারটা এমন না। অপেক্ষা করুন ঈদ বা বছরের শেষের ছাড়ের। তখন অনেক ব্র্যান্ড বা লোকাল শপ ৫০-৭০ শতাংশ ছাড়ে ভালো মানের পোশাক দিয়ে থাকে। এজন্য আপনার চোখ কান খোলা রাখতে হবে।

এছাড়াও অনলাইন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম আছে। যেগুলোতে ডিসকাউন্ট চলতেই থাকে। একটু খোঁজ নিয়ে, অফার দেখে, কুপন কোড খুঁজে অর্ডার করলে অল্প খরচে অনেক কিছু পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে ওয়েবসাইটটি বিশ্বস্ত কিনা।

৬. পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা আপনার স্টাইলের অর্ধেক
আপনার পোষাক যতই ভালো হোক না কেন, যদি আপনি অগোছালো হোন, চুল এলোমেলো, নখ বড়, জুতা ময়লায় থাকে তাহলে স্টাইল হবে না।

তাই সবসময় নিজেকে পরিপাটি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। যেমন, নখ ছোট রাখা, চুল পরিষ্কার ও গোছানো রাখা। নিয়মিত পারফিউম ব্যবহার। আপনি অনেক কম বাজেটেও ভালো মানের পারফিউম কিনতে পারবেন। এছাড়া জুতা ঝকঝকে রাখা। এসব ছোট ছোট ব্যাপারই আপনাকে স্মার্ট এবং ক্লাসি ভাব দেবে।

৭. পোষাক ফিটিং করা
সবচেয়ে দামি শার্টও যদি ছোট-বড় হয় বা শরীরে না মানায়, তাহলে দেখতে খারাপ লাগে। তাই জিমে যাওয়া না গেলেও অন্তত জামা যেন ফিটিং হয়, সেটা মাথায় রাখুন। শার্ট বা প্যান্ট দরকার হলে লোকাল দর্জির কাছেও ঠিক করিয়ে নিতে পারেন। এতে খরচ কমবে, আর ফিটও পারফেক্ট হবে।

৮. অল্প রঙে ম্যাচিং রাখুন
আপনার পুরো লুকের রঙ যদি তিনটার বেশি হয়, তাহলে সেটা চোখে অস্বস্তি তৈরি করে। তাই চেষ্টা করুন অল্প রঙে ম্যাচিং করা। যেমন ধরুন সাদা রঙের নীল ও কালোর সংমিশ্রণ রাখা, ধূসর রঙের সঙ্গে কালো। জলপাই সবুজ রঙের সঙ্গে সাদা রঙ। ধূসরের সঙ্গে মেরুন রঙ। এভাবে কম রঙে ম্যাচিং করলে লুক হয় সিম্পল, ক্লিন, ও বেশি পরিণত।

৯. আত্মবিশ্বাস
সবশেষে বলতেই হয়, আপনি যা-ই পরুন না কেন সেটা যদি আপনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে ক্যারি করতে না পারেন, তাহলে সবই বৃথা।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।

হয়তো আপনার বন্ধু ব্র্যান্ডেড পোশাক পরছে, আপনি লোকাল বা পুরনো জামা পরেছেন কিন্তু আপনি যদি কনফিডেন্ট থাকেন, হাসিমুখে কথা বলেন, গায়ে পরিষ্কার জামা থাকে তাহলেই আপনি সবার থেকে আলাদা।

এএমপি/জেআইএম