আবহাওয়া পাল্টাচ্ছে, এ সময় শিশুর যত্নে বিশেষজ্ঞের টিপস্
বর্তমানে সকালে গ্রীষ্ম, বিকেলে বর্ষা ও রাতে শরতের আবহাওয়া। আবহাওয়ার এই ওঠা-নামার জন্য সহজেই শিশুরা ঠান্ডা-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হয়। তাই এ সময় শিশুর সঠিক পরিচর্যার প্রয়োজন।
জেনে নিন এ সময়ে শিশুর বিশেষ যত্নের কিছু টিপস্
১. আরামদায়ক পোশাক
শিশুর সুরক্ষায় দরকার অভিভাবকদের সচেতনতা। শিশুরা সারাক্ষণ ছোটাছুটির মধ্যে থাকে। ফলে তাদের শরীরে ঘাম বেশি হয়। এজন্য শিশুদের সব সময় হালকা সুতির কাপড় পরাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শিশুর পোশাক যেন আঁটসাঁট না হয়, যাতে পর্যাপ্ত বাতাস ঢুকতে পারে। এতে শিশুদের ঘাম কম হবে। শিশুরা ঘেমে গেলে দ্রুত পোশাক বদলে ঘাম মুছে দিতে হবে। তাই দিন ও রাতের তাপমাত্রা বুঝে শিশুকে পোশাক পরানো উচিত।
২. নিয়মিত গোসল
শিশুরা বাইরে থেকে ফিরে গোসল করতে চাইলে তৎক্ষণাৎ গোসল করতে দেওয়া যাবে না, আগে শরীর ঠান্ডা হতে দিতে হবে। বাইরে থেকে ফিরে সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে নিয়মিত হাত ধুয়ে নিতে হবে। আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। শিশুর শরীর জীবাণুমুক্ত রাখতে গোসলের পানিতে অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড বা নিমের পাতা মিশিয়ে গোসল করালে ভালো হবে।
৩. ফ্যানের গতি
শিশুর শরীর ঘামছে বলে জোরে ফ্যান চালানো যাবে না। যদি ফ্যান চালাতেই হয়, তবে হালকা করে ছেড়ে রাখুন। অনেক সময় শুধু ফ্যানের বাতাসের কারণেও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে।
৪. ঠান্ডা পানীয়
গরমের সময় আইসক্রিম বা কোল্ড ডিংকস খেতে ভালো লাগলেও তাতে উপকার নেই। আবার অনেক সময় শিশুরা বাসায় ফিরে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি পান করে। এটা শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। গরম থেকে এসেই বেশি ঠান্ডা পানি পান করা ঠিক না।
৫. সংক্রমণ ও ত্বকের যত্ন
শীতের শুরুতে শিশুদের ঠান্ডা বাতাস এবং ধুলো থেকে দূরে রাখতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্কুলে বা বাইরে নিয়ে গেলে মুখে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস করাতে হবে। শিশুর নাক বন্ধ, ঠান্ডা, কাশি, গলা ব্যথা– এজাতীয় সমস্যায় আদা-লেবু চা, গরম পানিতে গড়গড়া, মধু, তুলসীপাতার রস খাওয়ানো যেতে পারে।
এ সময় শিশুদের হালকা কুসুম গরম পানি পান করানো উচিত। গোসলে নিমপাতা ব্যবহার করতে পারলে ভালো। ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত ব্রাশ করা, হাত-মুখ ধোয়া, খাওয়াসহ শিশুদের সব সময় হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে ও হালকা গরম পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। শিশুর ত্বক অনেক বেশি সংবেদনশীল, সহজেই শুষ্ক হয়ে যায়। সেজন্য বেবি অয়েল, বেবি ক্রিম, গ্লিসারিন ব্যবহার করা যেতে পারে। সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
একটি পরিবারের আনন্দ শিশুদের চঞ্চলতার ভিতরে সীমাবদ্ধ থাকে, তাই শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে।
লেখক: ডা. সেলিনা সুলতানা
কনসালটেন্ট, নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্ট, বেটার লাইফ হসপিটাল।
সাবেক অটিজম বিশেষজ্ঞ, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল।
এএমপি/জেআইএম