মেছতা হালকা করার ঘরোয়া উপায়
সংগৃহীত ছবি
দাগবিহীন, নিখুঁত ও ঝকঝকে ত্বক কে না পছন্দ করেন! নায়িকাদের মতো কোমল ত্বকের আশায় অনেকেই ফেসিয়াল, স্ক্রাবিং কিংবা স্টিমিং ট্রিটমেন্ট করিয়ে থাকেন। তবুও কারো কারো ত্বকে নাকের পাশে, গালে বা কপালে বাদামি রঙের ছোট ছোট দাগ দেখা দিতে থাকে। এই কালো ছোপ ছোপ দাগই হলো মেছতা -যা অনেকের জন্যই বড় এক উদ্বেগের কারণ।
ত্বক যত উজ্জ্বল হয়, মেছতার দাগও তত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তবে মেছতা ছোঁয়াচে নয়। আর সঠিক সময়ে যত্ন শুরু করলে এর বিস্তার অনেকটাই কমিয়ে রাখা যায়।
মেছতা হওয়ার কারণ
১. মেছতা হওয়ার মূল কারণ হলো ত্বকে মেলানিন নামের রঞ্জকের অতিরিক্ত উৎপাদন। হরমোনের পরিবর্তন-যেমন গর্ভাবস্থা, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা থাইরয়েডের সমস্যা,এই দাগকে বাড়িয়ে দিতে পারে।

২. শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রায় পরিবর্তন হলে মুখে মেছতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় হরমোন দ্রুত ওঠানামা করে, ফলে অনেক নারীর ত্বকে বাদামি দাগ বা মেছতা তৈরি হয়।
৩. যারা দীর্ঘ সময় রোদে কাজ করেন কিন্তু সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন না, তাদেরও মেছতার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। মেছতা হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। সূর্যালোকে থাকা ইউভি-এ ও ইউভি-বি মেলানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, ফলে মুখে বাদামি দাগ দেখা দিতে পারে। শুধু রোদ নয়, চুলার আগুন বা তাপের কাছেও বেশি সময় থাকলে ত্বকে একই ধরনের দাগ তৈরি হতে পারে।
৪. মুখের দাগ দূর করতে অনেক নারী স্টেরয়েড জাত ক্রিম ব্যবহার করেন। তবে এ ধরনের ক্রিম দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ত্বক আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়া, লালচে ভাব, সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি- এসব সমস্যা স্টেরয়েডের অতিরিক্ত ব্যবহারে দেখা দিতে পারে।

রূপচর্চার কিছু ঘরোয়া উপদান ব্যবহারে দাগ হালকা হতে পারে। মেছতাকে নিয়ন্ত্রণ রাখার কিছু ঘরোয়া প্যাক-
১. টক দই ও মধু
১ চা চামচ টক দইয়ের সঙ্গে কিছুটা মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট হালকা হাতে মাসাজ করুন, তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দইয়ের পরিবর্তে অ্যালোভেরার জেলও ব্যবহার করতে পারেন।
২. লেবুর রস ও চিনি
১ চা চামচ লেবুর রসে সামান্য চিনি মিশিয়ে মেছতার দাগের ওপর হালকা হাতে ঘষে নিন, যতক্ষণ না চিনির দানা গলে যায়। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

৩. আলুর রস
কাঁচা আলুর রসে থাকা ক্যাটেকোলেজ এনজাইম ত্বকের পিগমেন্টেশন কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের রঙ সমান করতে প্রাকৃতিকভাবে কাজ করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচিংয়ের কাজও করে। একটি মাঝারি আকারের আলু ছাড়িয়ে কুঁচি করুন এবং রস বের করুন। তুলার বল ব্যবহার করে সরাসরি মেছতার দাগে লাগান। ১৫ মিনিটের জন্য রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কমপক্ষে তিন সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহার করলে দাগ হালকা হতে শুরু করবে। যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়, তাহলে আলুর রসের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল বা অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
৪. আমন্ড অয়েল
অল্প গরম করে ২-৩ ফোঁটা আমন্ড অয়েল আঙ্গুলে নিয়ে মেছতার জায়গায় কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এক ঘণ্টা পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আমন্ড অয়েল প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে এবং মেছতার দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে ভিটামিন এ এবং ই থাকে, যা ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি দেয়।
মেছতার দাগ হালকা রাখতে তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি। পর্যাপ্ত পানি পান করা মেছতা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুন
রূপচর্চায় প্রাকৃতিক উপায়ে চুনের ব্যবহার
গোসলের আগে যে প্যাক আপনার ত্বককে রাখবে সতেজ
এসএকেওয়াই/জেআইএম