ভিডিও EN
  1. Home/
  2. লাইফস্টাইল

বাঙালি ফ্যাশনে বাটিক

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৬:১৫ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০২৫

আধুনিক ফ্যাশনে বাটিক প্রিন্টের জুড়ি নেই। কিশোরী থেকে শুরু করে বয়স্ক নারীরা বাটিকের বাহারি পোশাক পরতে পছন্দ করে। এমনকি ছোটদের আরামদায়ক পোশাক হিসেবে পছন্দের তালিকায় আছে বাটিকের পোশাক। সময়ের সঙ্গে বাটিকের পোশাকে এসেছে নানা রং ও ঢঙের বৈচিত্র্য। নকশায় এসেছে নতুনত্ব, সঙ্গে রয়েছে বাঙালিয়ানার ছাপ। তবে তার জনপ্রিয়তায় কোথায় ভাটা পড়েনি।

আজ (২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক বাটিক দিবস উপলক্ষে চলুন জেনে নিই বাটিক কেন এখনো ফ্যাশনে জনপ্রিয়-

বাঙালি ফ্যাশনে বাটিক

বাটিকের ছোট্ট ইতিহাস

বাটিকের  ইতিহাস ও উৎস সম্পর্কে সঠিকভাবে তেমন কিছু জানা যায়নি। তবে ধরে নেওয়া হয়, বাটিকের জন্ম ইন্দোনেশিয়ার জাভা বালিতে। সমুদ্রের নীল জলরাশি কিংবা সবুজ প্রকৃতি ফুটে ওঠে বাটিকের রঙে। কারিগররা সুনিপুণ হাতে নিজস্ব সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করেন। যে কারণে বাটিক ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। পোশাক শিল্পে আধুনিকতার সংক্রমণ ঘটলেও বংশপরম্পরায় এখনো অনেকে ধরে রেখেছেন বাটিক তৈরির ঐতিহ্য।

পশ্চিমবঙ্গে বাটিক জনপ্রিয় করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ধারণা করা হয়, বাইরে কোথাও বাটিকের কাজ দেখে শান্তিনিকেতনেও সেটা শুরু করেন। শান্তিনিকেতনের বাটিকে প্রাধান্য পায় মূলত আলপনার নকশা। এভাবেই এই উপমহাদেশে বাটিক প্রবেশ করে । তবে আমাদের দেশে বাটিকের নকশা একেবারেই ভিন্ন।

বাটিক প্রিন্ট এখনো জনপ্রিয়  

বাটিকের নতুন নতুন নকশা, পরতে আরামদায়ক, স্বল্পমূল্যের জন্য বাটিক সব সময়ে ফ্যাশনেবল পোশাক হিসেবে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। 

 আমাদের দেশে নারীদের পোশাকে বাটিক 

প্রতিদিনের পোশাক থেকে শুরু করে উৎসব-অনুষ্ঠানেও বাটিকের পোশাক সহজে পরা যায়। বাটিকের হালকা রঙের পোশাক দিয়ে থাকে সারা দিনের স্নিগ্ধতা। এই পোশাক স্বস্তিদায়ক তো বটেই, সেই সঙ্গে ফ্যাশনেরও এক দারুণ অনুষঙ্গ। বর্তমানে নারীরা শাড়ির পাশাপাশি প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য বাটিকের সালোয়ার-কামিজ পরে থাকেন। বিভিন্ন পোশাকে বাটিকের কাজ এনে দেয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া। এছাড়া ইউনিভার্সিটি, অফিস-আদালতে বাটিকের কুর্তি বা ফতুয়া অনায়াসে জিন্স, লেংগিস বা জেংগিসের সঙ্গে পরা যায়। বাটিক প্রিন্টের স্কার্ট বেশ জনপ্রিয়। স্কার্টের সঙ্গে বাটিক প্রিন্টের কিংবা একরঙা টপস পরলে ভালো দেখাবে।

ছেলেদের পোশাকে

শুধু মেয়েদের পোশাকই নয়, ছেলেদের বাটিকের হাফ হাতা শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়ারও চল রয়েছে। বাটিক প্রিন্টের শার্ট ও ফতুয়া যেমন আরামদায়ক তেমনি ফ্যাশনেবল। ক্যাজুয়াল বা সেমি-ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে বাটিক প্রিন্টের শার্ট বেছে নিতে পারেন। বাটিকের সুতির শার্ট বা ফতুয়ায় বাড়তি আরামের পাশাপাশি নকশায় থাকে স্নিগ্ধতার ছাপ। এছাড়া বাটিক প্রিন্টের পাঞ্জাবি যে কোনো উৎসবে মানিয়ে যায় সহজে।

যেভাবে করা হয়

বাটিকের কাজে প্রথমেই কাপড়ে মোম দিয়ে নকশা আঁকা হয়। এরপর পুরো কাপড়ে রঙে ভিজিয়ে নেওয়া হয়। শুকিয়ে এলে মোম তুলে ফেললেই তৈরি হয় নতুন নকশার কাপড়। ইদানীং মোম বাটিকের পাশাপাশি ব্লক বাটিকের কাজও হচ্ছে।

বাঙালি ফ্যাশনে বাটিক

বাটিকের রং

বাটিকের রং হিসেবে প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক দু ধরনের রংই ব্যবহার করা হয়। এক সময় বাটিকের রং ব্যবহারে নানা ধরনের বাধ্যবাধকতা দেখা যেত। ধরাবাঁধা নিয়ম থেকে বেরিয়ে এসেছেন ডিজাইনাররা। রঙের ব্যবহারে এখন কোনো নিয়ম মানা হয় না । তাই নীল, তুঁতে, গাঁদাফুল, শিউলীফুল, পেঁয়াজের খোসা, হরতকী, খয়ের ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান থেকে বিশেষ উপায়ে রং তৈরি করে বাটিকের কাজ কাপড়কে করে তোলে আরও অভিজাত।

বাটিকের কাপড়

আগে শুধু সুতি কাপড়েই বাটিক করা হতো, বর্তমানে সুতির পাশাপাশি সিল্ক, গরদ, তসর, মসলিন, অ্যান্ডিকটন এমন কি খাদি কাপড়েও বাটিক প্রিন্ট করা হয়। এছাড়া সিল্কের ওপর বাটিক প্রিন্টের পোশাক স্বস্তি দেয় বলে এর কদর অনেক।

ফ্যাশন হাউসগুলোর আলাদা নকশা

ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আর ক্রেতার চাহিদার কথা ভেবে নিত্যনতুন ডিজাইন ফুটিয়ে তোলেন ফ্যাশন হাউজ ডিজাইনরা। ফ্যাশন হাউজগুলোয় বাটিকের সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, ফতুয়া ও শাড়ি, শার্ট, পাঞ্জাবি সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে। এমনি বাটিকের বেড শীট এবং ঘর সাজানো নানা উপকরণ মিলছে।

ট্রেন্ডিংয়ে যা

বাটিকের স্কার্ট পালাজ্জো, পালাজ্জো এখন ট্রেন্ডে। সঙ্গীর শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে একই রং বা ডিজাইনের পাঞ্জাবি পরাটাও বেশ জনপ্রিয়।

দরদাম ও কোথায় পাবেন

ফ্যাশন হাউজে আড়ং, তাগা, হরীতকী, অঞ্জন’স, রঙ বাংলাদেশ, কে ক্রাফট, নিপুণ, দেশাল, যাত্রাসহ বিভিন্ন হাউজে বাটিকের পোশাকের বিপুল সমাহার রয়েছে। এছাড়া ঢাকার গাউসিয়া, চাঁদনিচক, নিউমার্কেটসহ নানা জায়গায় বাটিক প্রিন্টের গজ কাপড় ও পোশাক পেয়ে যাবেন। ব্র্যান্ডভেদে পোশাকগুলোর দামের তারতম্য হয়ে থাকে। সর্বনিম্ন ৫৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকার মধ্যেই পাবেন ।

আরও পড়ুন
কো-অর্ড যেভাবে পরলে নায়িকাদের মতো দেখতে লাগবে 
হানিয়া আমিরের সৌন্দর্যের রহস্য 

এসএকেওয়াই/কেএসকে/জিকেএস

আরও পড়ুন