ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

গোলাম রববানীর কবিতা

ধূলিজলে কারা যেন খেলেছিল এবং অন্যান্য

সাহিত্য ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ২১ জুন ২০২৫

ধূলিজলে কারা যেন খেলেছিল

কারা যেন একদিন দলবেঁধে নেমেছিল
ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপালেরই মতো আর মনে নেই
ছোট্ট একটা ঘুমের মতো ছোট্ট এ জীবন
মৃত্যুর দুয়ারে ঘণ্টাহীন যেন সংকেত ছাড়াই পড়ি

খুব সহজেই বুঝতে না পারি, অচেনা বাড়ির টানে
ক্ষমা মহৎ কর্ম ভুলি প্রতিশোধপরায়ণতার ক্যুবানে
সময় চলে গেলে পেছনে শুধু দুহাত বাড়িয়েই ডাকি
পথের কষ্ট আর কতটুকুই বোঝে পৃথিবীর পথিক

কারা যেন একদিন শুধু দলবেঁধে নেমেছিল
পাহাড় সুউচ্চ হতে হতে নিঃসঙ্গ সারথি হয়েছিল
আব্বার ছেলে আর ছেলের আব্বার মতন
আমার এখন চব্বিশের অভ্যুত্থানের কথা মনে পড়ে

এখন কেবল জলে-স্থলে আর আকাশে-বাতাসে
ভাঙনের বেগে ভাঙে, জলজ স্থলজ এবং প্রাণজ
কখনো ভাঙে না সমূহ পৃথিবীর সব আব্বারা
আমার আব্বা পৃথিবীর যুদ্ধবিধ্বস্তের মতো হলেও
টিকে আছে বিরুদ্ধ সময়ের বিরূপতা সহ্য করে
শত ঝড়-ঝঞ্ঝা, উসকানির তির্যকফাল বুকে নিয়ে
গোপাল বিড়ির গন্ধ আমার প্রিয় পারফিউম হলে
বারান্দার মেঝের প্লেটের ওয়াক্তগুলো আনন্দে

কারা যেন একদিন শুধু দলবেঁধে নেমেছিল
তারপরে চলে গেছে ঝাঁকবাঁধা ভিমরুল আল ফেলে
ঢোঁড়া সাপের মতন আর বোবার মতন আমি
আব্বা বলে ধৈর্য সহ্যে শক্তি আসে বাকিটা তো সময়ের

****

পথের কাছে প্রার্থনা

পৃথিবী আরও হাইফাই ভাবে বেঁচে থাকতে পারতো
পৃথিবীটা জন্ম থেকেই বিচ্ছিন্ন, এতটা বিকৃত ছিল না
ছিল না প্রযুক্তির এতটা উন্নয়ন এবং উৎকর্ষতা।

আমরা মানুষগুলো ছন্নছাড়া আর উজবুক টাইপের
দল পাকানোতে ব্যতিব্যস্ত, ক্ষমতার মোহে অন্ধ—
প্রযুক্তির ব্যবহারে ঠিক এতটাই আনাড়িপনা স্বভাবের

শার্পনেল ছড়িয়ে গেলেই শেল বা বোমার দোষ কী!
আমাদের আবিষ্কৃত ইন্টারনেটের শক্তি বুঝি,
ন্যানো সেকেন্ডেই ছড়াতে পারে ধ্বংসযজ্ঞের খবর।

মানুষের বিবেকের আয়না দেখায় মানুষের কৃতকর্ম
রক্তাক্ত এবং রক্তোৎপল পূর্ণ বিশ্বভূবন,
যুদ্ধ আর রাজনীতি গেঁথে দেয় জীবিতের ফলক
যা অপাঠ্য ভয়ংকর সুন্দর অগণিত নীল শিলালিপি

আজ ভরে গেছে বঁধু সৌন্দর্যের আলোছায়া পথ
যে পথ মানুষের পাথেয়, পার্থ মাতার ভক্ষণে গেলে তা
অকূলদরিয়ার সমান্তরালে পথ নিখোঁজ কেলেঙ্কারি!

অদৃশ্য বলয় ধরে পথ কতটুকু পাড়ি দিতে পারে?
যুদ্ধের থেকে নেই কোথাও কোনো কঠোর হুঁশিয়ারি;
এই তো কিছুটা অতিমারি আর এতটাই মহামারি!

****

কেউ গাছের নিচে আগলে রেখেছিলেন

একটা গাছের মতো আমি দাঁড়িয়ে আছি কেমন করে
হালকা বাতাসে ঝরে না কখনো
গাছের সবুজ পাতা তবু ঝরানোর এ কী অপচেষ্টা!

বড় ইচ্ছে ছিল গাছটিকে সরিয়ে ফেলার
কিন্তু ঈশ্বরের জন্যই হয়তো—নিধন হয়নি আর
সময়মতো গাছটির পরিচর্যার সুযোগেই
গাছটিতে আজ ফুল ফোটে—জীবন মালির জন্যই—
অপার হয়েই মনেপ্রাণে যাচি এই আমি আমার কর্মকে

বনে বনে পাখি, কিচিরমিচির গানে গানে মুখরিত
গাছের শাখাপ্রশাখে—শীতল ছায়ায় পথচারী—
গাছ ছায়া ধরে মাঝেমধ্যে নেয় যেন গাছ ছিঁড়ে ছিঁড়ে
তবু বেড়ে চলে গাছের পরিধি, রাস্তায় নামে না কখনো
মাটি ফুঁড়ে শুকনো পাতার নিচে গাছ বেড়ে ওঠে—
গাছ তো আর টায়ার না আচমকাই লিক হতে পারে!

সবকিছু বদলাতে পারে গাছ কী বাতাস ধরে রাখে?
গাছপাতা পানি ধরে—চৈত্রের মাটি চৌচির হতে পারে—
সবকিছু বদলাতে পারে চোখের পানি কী পারে?
সময় বদলে যেতে যেতেই সময় বসে গাছের তলে।

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন