‘কোচিং না করালে মিস আদর করে না, সেই কোচিংই মেয়ের সর্বনাশ করলো’
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন/ছবি: জাগো নিউজ
‘মেয়ে বলতো মা কোচিং না করালে মিস আদর করে না। আমি মেয়েকে কোচিংয়ে দিলাম। সেই কোচিংয়ের কারণেই আমার মেয়ে মারা গেলো। এই কোচিংই আমার মেয়ের সর্বনাশ করলো।’
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মা আক্তারের মা রীনা আক্তার।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টায় স্কুল সংলগ্ন মেট্রো স্টেশন ডিপোর সামনে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা এই মানববন্ধন আয়োজন করেন। এ সময় কর্মসূচিতে উপস্থিত পরিবারের সদস্যদের চোখ ছলছল করছিল। তাদের অনেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ করেন।
- আরও পড়ুন
- উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত
- ১২ দিন পর খুললো মাইলস্টোন, নেই শিক্ষার্থীদের হৈ-হুল্লোড়
- মাইলস্টোন দুর্ঘটনার পর অনেক বাচ্চা অস্বাভাবিক আচরণ করছে
মানববন্ধন যখন চলছিল তখন স্কুলে যাচ্ছিলেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তাদেরও মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান আয়োজকরা।
নিহত উম্মে আফিয়ার মামা সাব্বির বলেন, ‘আজ অনেকদিন হলো, এই ঘটনার কী তদন্ত হলো, কী বিচার হলো আমরা জানতে পারিনি।’
অভিভাবক লিয়ন বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে এমন নীতিমালা চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই স্কুলে কোচিং বাণিজ্য হতো, এটা সবাই জানে। এই কোচিং করার কারণে বাচ্চাগুলো মারা গেলো।’
এ সময় অভিভাবকরা, ‘ফুলগুলো সব পুড়লো কেন, জবাব চাই, বিচার চাই’; ‘ফুল পাখি সব পুড়লো কেন, জবাব চাই, বিচার চাই’; ‘বাচ্চাগুলো পুড়লো কেন, জবাব চাই, বিচার চাই’ স্লোগান দেন।
গত ২১ জুলাই দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক।
বিমান বিধ্বস্তের ১২ দিন পর গত ৩ আগস্ট খুলেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রথমদিন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ক্যাম্পাসে আসেন। তবে আগের সেই হৈ-হুল্লোড়ের দেখা মেলে না, চারদিকে একটা নিস্তব্ধতা বিরাজ করে।
এসএম/ইএ/জেআইএম