পেঁয়াজের দাম কারসাজিতে জড়িতদের চাকরি থাকবে না: কৃষি উপদেষ্টা
সচিবালয়ে কৃষির সার্বিক বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী/ছবি: জাগো নিউজ
কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত চক্র খুঁজে বের করতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এরসঙ্গে কৃষি কর্মকর্তারা জড়িত থাকলে তাদের চাকরি থাকবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ও উপ-পরিচালকদের সঙ্গে সভা শেষে কৃষির সার্বিক বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা বেড়ে গেছে। আজকে আবার দেখলাম দাম একটু কমে গেছে। এই কারসাজিগুলো করে কৃষকদের যেমন ঠকানো হচ্ছে, ভোক্তাদের আরও বেশি ঠকানো হচ্ছে। এই চক্রটা খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিল। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উঠছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজও ওঠানো শুরু হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে বাজারে কিন্তু পেঁয়াজের কোনো সংকটও নেই। কিন্তু দামটা হঠাৎ বেড়ে গেছে, ভোক্তারা ভোগান্তিতে পড়েছে।
কৃষি উপদেষ্টা আরও বলেন, পেঁয়াজের সংকট নেই, কিন্তু হঠাৎ করে দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় আমাদের কিছু আমদানি করতে হচ্ছে। আমদানি করার পর দেখা যাবে দামটা কমে গেছে। আজকে কিন্তু দাম কমা শুরু হয়েছে। আবার দাম বেশি কমে গেলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কারসাজির সঙ্গে কোনো কৃষি কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তাদের চাকরি থাকবে না। আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা দেখবে ব্যবসায়ীরা যাতে যৌক্তিক লাভ করতে পারে।
তামাক চাষে সার ব্যবহারে কড়াকড়ি আসছে
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সারের মজুতে কোনো অভাব নেই। কিন্তু আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সারের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে চাচ্ছি। তামাক উৎপাদন নিরুৎসাহিত করার জন্য আমরা তামাকে সার দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি কড়াকড়ি আরোপ করবো।
এখন গরু ও মাছকে সার খাওয়ানো হয় জানিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখন জমিতে কীটনাশক দেওয়া হয়, অনেকগুলো কীটনাশকের জাত আছে খুবই খারাপ। এগুলো বাজার থেকে যেভাবে হোক বন্ধ করতে হবে। কীটনাশকটা মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
দরকার হলে কৃষি কর্মকর্তাদেরও পদায়নে লটারি
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমরা এসপি ও ওসিদের লটারির মাধ্যমে পদায়ন করেছি। এখানেও (কৃষি ক্ষেত্রে) দরকার হলে কৃষি কর্মকর্তাদেরও আমি লটারির মাধ্যমে পদায়ন করবো। ইতিমধ্যে আমি দুজনকে লটারির মাধ্যমে করেছিলাম।
অনেক কৃষি কর্মকর্তা শুধু ভালো জায়গা খোঁজে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো জায়গায়ই খারাপ না। আপনারা তো বুঝতে পারেন ভালো বলতে তারা কোনটাকে বোঝায়। চলতি মৌসুমে ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশ আমন ধান কাটা শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা।
আরও ১০০ কোল্ড স্টোরেজ দেওয়ার চেষ্টা
সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, যতই দিন যাবে সবজির দাম কমবে। দাম যাতে এতো না কমে যে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এ বিষয়ে আমাদের সবার খেয়াল রাখতে হবে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য সংগ্রহের জন্য আমরা স্থানীয় পর্যায়ে ১০০ কোল্ড স্টোরেজ দিয়েছি। এটা পর্যাপ্ত না, আমরা আরও ১০০ কোল্ড স্টোরেজ দেওয়ার চেষ্টা করছি।
আরএমএম/এমএমকে/এমএস