মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যা: সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
স্কুল ড্রেস পরে বের হয়ে যাচ্ছেন অভিযুক্ত গৃহকর্মী/ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন মামলার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
পুলিশের ধারণা, এ হত্যাকাণ্ডে গৃহকর্মী আয়েশা জড়িত। ঘটনার পর থেকে ওই গৃহকর্মী পলাতক। তার বয়স ২০ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে বাসায় এসেছিলেন। বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার পরনে ছিল নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নাফিসার গলায় একাধিক গভীর ক্ষত এবং লায়লার শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাতে গ্লাভস পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মা-মেয়েকে আঘাত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বাসার চাবি হারানোর পরদিন ফ্ল্যাটে ঢুকে মা-মেয়েকে হত্যা
মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার
ভবনের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নাফিসার বাবা সকাল ৭টার দিকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে ওই বাসার লিফটে উঠে সাত তলায় যান গৃহকর্মী আয়েশা। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে ড্রেস পরে মুখে মাস্ক লাগিয়ে বের হয়ে যান।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজের বাবা আজিজুল ইসলাম সকালে স্কুলে যান। তিনি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় এসে স্ত্রী-সন্তানের মরদেহ দেখতে পান।
আজিজুল ইসলাম জানান, ভবনের তত্ত্বাবধায়ক ও নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে চারদিন আগে ওই গৃহকর্মীকে কাজে নেন। সকালে এসে বাসার কাজ করে চলে যেতেন। এর মধ্যে রোববার বাসার মূল দরজার চাবি হারিয়ে যায়। সন্দেহ হলেও গৃহকর্মীকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
আজিজুল বলেন, ‘মেয়েটির পরিচয় ও ফোন নম্বর চেয়েছিলাম। কিন্তু সে বলেছিল, আগুনে পুড়ে তার মা-বাবা মারা গেছেন। সে-ও আগুনে দগ্ধ হয়েছিল। এসব বলে পরিচয় ও ফোন নম্বর দেয়নি।’
আজিজুলের গ্রামের বাড়ি নাটোর সদর উপজেলায়। ২০১২ সাল থেকে তিনি পরিবার নিয়ে বহুতল ভবনটির সপ্তম তলায় নিজের ফ্ল্যাটে থাকতেন।
টিটি/ইএ