ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

২৭তম বিসিএসের বঞ্চিত ৬৭৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:০৫ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

আদালতের রায়ের আলোকে প্রথম পর্যায়ে বঞ্চিত ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় ৬৭৩ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশে এ প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আইনি লড়াইয়ে জিতে দুই দশক পর নিয়োগ পেলেন এ চাকরিপ্রার্থীরা।

নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামী ১ জানুয়ারি মধ্যে ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগের নির্ধারিত কার্যালয়ে যোগদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ থেকে পরবর্তী কোনো নির্দেশনা না পেলে ওই তারিখেই তিনি যোগদান করবেন। নির্ধারিত তারিখে যোগদান না করলে তিনি চাকরিতে যোগদান করতে সম্মত নন বলে ধরে নেওয়া হবে এবং নিয়োগপত্র বাতিল হয়ে যাবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনটি দেখতে ক্লিক করুন

এতে আরও বলা হয়, এ নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগপ্রাপ্তদের জ্যেষ্ঠতা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে তাদের ব্যাচের নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রথম যে তারিখে নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল সেই তারিখ থেকে ভূতাপেক্ষিকভাবে নিয়োগ আদেশ কার্যকর হবে। ব্যাচের প্রথম নিয়োগ প্রজ্ঞাপনের যোগদানের তারিখ থেকে তাদের ধারণাগত জ্যেষ্ঠতা বজায় থাকবে। তবে এর ফলে তারা কোনো বকেয়া আর্থিক সুবিধাদি পাবেন না।

২৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে এ পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং এ বিসিএসের মাধ্যমে এরইমধ্যে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতা আপিল বিভাগের দেওয়া রায় অনুযায়ী নির্ধারিত হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি বিএনপি সরকারের আমলে ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৩৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। পরে ওই বছরের ৩০ জুন জরুরি অবস্থার সময় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ওই ফল বাতিল করে তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার। এরপর মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট রিট করেন উত্তীর্ণরা। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন রিটকারীরা।

অন্যদিকে ২০০৭ সালের ২৯ জুলাই ২৭তম বিসিএসের দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ফল অনুযায়ী দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে পরে হাইকোর্টে তিনটি পৃথক রিট দায়ের করেন প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর ওই তিনটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৭তম বিসিএসে দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনটি লিভ টু আপিল আবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা কিছু পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

এরপর আপিল বিভাগের রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন বাতিল হওয়া ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উর্ত্তীণরা। গত বছরের ৭ নভেম্বর রিভিউ আবেদন মঞ্জুর করে তা শুনানির জন্য গ্রহণের আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এর ফলে প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ বঞ্চিত রিভিউ আবেদনকারীদের আইনি লড়াইয়ের পথ উন্মুক্ত হয়। পরে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই আবেদনের শুনানি শেষে ২০ ফেব্রুয়ারি রায়ের দেন আপিল বিভাগ। রায়ে ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দেওয়া হয়।

গত ১১ আগস্ট বিসিএসে বঞ্চিত এক হাজার ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের রায় দ্রুত কার্যকরের নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সরকারকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

আরএমএম/এসএইচএস/এএসএম