বিবিএস’র জরিপ
দেশে ২৮.৬ শতাংশ স্কুলে ৫০ শিক্ষার্থীর জন্য একটি উন্নত টয়লেট
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো/ফাইল ছবি
দেশে মাত্র ২৮.৬ শতাংশ স্কুলে প্রতি ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি উন্নত টয়লেট রয়েছে। যা আন্তর্জাতিকভাবে সুপারিশকৃত ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণ করে। মাত্র ৩৩.৯ শতাংশ স্কুল এবং ৪৫.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিরাপদভাবে মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে। যা পরিবেশ দূষণ ও রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপে উঠে এসেছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের অডিটোরিয়ামে রোববার (২১ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিবিএস বলছে, উন্নত পানির উৎসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত। যা বিদ্যমান ব্যবস্থার টেকসই হওয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসআইডি সচিব আলেয়া আক্তার। ফলাফল উপস্থাপন করেন ফোকাল পয়েন্ট এসডিজি সেলের মো. আলমগীর হোসেন।
বিবিএস বলছে, জরিপে আটটি বিভাগ এবং ৬৪টি জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বিস্তৃত স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিনিধিত্বমূলক তথ্য নিশ্চিত করার জন্য ওয়াটসনের সূত্র অনুসারে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং ২০১৪ সালের ২৬ জুন থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে কাজ করা হয়েছিল।
জরিপের ফলাফল বলছে, দেশের শতকরা ৯৫.৪ শতাংশ স্কুলে ও ৮৭.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নত পানির উৎসে প্রবেশগম্যতার সুবিধা রয়েছে। যা তুলনামূলকভাবে বেশ উচ্চ হার। তবে মৌলিক পানি সেবার সংজ্ঞা অনুযায়ী, যেখানে উন্নত পানির উৎস প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণের ভেতরে থাকতে হয়, এই মানদণ্ড পূরণ করে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। মাত্র ৮৬.১ শতাংশ স্কুল এবং ৭০.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এই মানদণ্ড পূরণ করে। তবে দেশের মাত্র ৫৫.৪ শতাংশ স্কুলসমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী উন্নত পানির পয়েন্টে প্রবেশগম্যতার সুবিধা রয়েছে। অপরদিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে এই হার আরও কম, মাত্র ৪০.৯ শতাংশ।
জরিপের ফলাফল অনুসারে মাত্র ১১.১ শতাংশ স্কুল এবং ৩৪.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এই খাতে বরাদ্দ রয়েছে। ৯০.৬ শতাংশ স্কুল এবং ৯৮.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অন্তত একটি টয়লেট রয়েছে। তবে এর মান ও ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে ভিন্নচিত্র পাওয়া গেছে।
অপরদিকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে হাত ধোয়ার সুবিধা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে পানি ও সাবানের অভাব রয়েছে। ফলে, মাত্র ৫১.৭ শতাংশ স্কুল এবং ৫.০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হাত ধোয়ার মৌলিক সেবার মানদণ্ড পূরণ করতে পারছে। এর ফলে কার্যকর স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন ব্যাহত হচ্ছে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে। নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধাও অপর্যাপ্ত। মাত্র ২০.৭ শতাংশ স্কুলে কিশোরীদের জন্য পৃথক, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট রয়েছে এবং মাত্র ৬.৯ শতাংশ স্কুল মৌলিক MHM সেবা প্রদান করে থাকে। এসব সুবিধার ঘাটতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, অস্বস্তি এবং শিক্ষায় লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যকে বাড়িয়ে তোলে।
বিবিএসের জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, যেখানে ৭৮.৩ শতাংশ স্কুল উপযুক্ত কঠিন বর্জ্য নিষ্পত্তির কথা জানিয়েছে, সেখানে মাত্র ২৫.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মৌলিক মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এই মানদণ্ড অনুযায়ী বিপজ্জনক বর্জ্যের নিরাপদ পৃথকীকরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ৪১.৬ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানোর ওপর নির্ভর, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
জরিপে উঠে এসেছে, গত ১২ মাসে ২৪.০ শতাংশ স্কুল এবং ১৯.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে। যার ফলে বহু ক্ষেত্রে পানি ও স্যানিটেশন অবকাঠামোর সরাসরি ক্ষতি হয়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণতার পরও জলবায়ু সহনশীল ওয়াশ ব্যবস্থার জ্ঞান ও বাস্তবায়নের হার খুবই কম। মাত্র ৩৩.৭ শতাংশ স্কুল এবং ৯.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার বিষয়ে অবগত থাকার কথা জানিয়েছে। এর চেয়েও কম প্রতিষ্ঠান এসব ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে।
এমওএস/এমএমকে/এমএস
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা নিয়ে দিল্লির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান ঢাকার
- ২ বজ্রপাতে ১৫ বছরে দুই হাজার মৃত্যু, সতর্কতা ও প্রস্তুতি এখনো সীমিত
- ৩ অতি দ্রুত যৌথ অভিযান শুরু হবে, মেসেজ ক্লিয়ার: ইসি সানাউল্লাহ
- ৪ দেশে ২৮.৬ শতাংশ স্কুলে ৫০ শিক্ষার্থীর জন্য একটি উন্নত টয়লেট
- ৫ নির্বাচনে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের আবেদনের সময় বাড়লো