আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে : প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রোববার রাত ৯ টায় গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতের উদ্যোগে আদালতের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জুডিসিয়াল কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি মামলার তদন্তে পুলিশের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে বলেন, পুলিশকে মামলার সঠিক তদন্ত করে বিচার প্রার্থীদের ন্যায় বিচার পেতে সহযোগিতা করতে হবে। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে মামলার প্রকৃত আসামিদের বাদ প্রতিবেদন দিয়ে থাকে। এতে মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যারা অপরাধী তারা পার পেয়ে যায়। ১৬১ ধারায় জবানবন্দী নেওয়ার সময় পুলিশকে আরো যত্নবান হতে হবে।
আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মক্কেলদের প্রতি মানবিক হতে হবে। তারা যাতে সুবিচার পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গরীব বিচার প্রার্থীরা যাতে সুবিচার থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
এসময় প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশ্যে প্রতি মাসে অন্তত একবার জুডিসিয়াল কনফারেন্স করার নিদের্শনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের কারাগার পরিদর্শন করে কারাবন্দীদের সুবিধা অসুবিধা এবং মহিলা কারাবন্দীদের অযথা হয়রানির শিকার হতে না হয় সেটি পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি জাতির জনকের জন্মভূমি-পবিত্রভূমি গোপালগঞ্জে আসতে পেরে এবং সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। তিনি জন্মেছিলেন বলেই আমরা মুক্ত বাতাসে বিচরণ করতে পারছি। যার যার অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। জেলা ও দায়রা জজ মো. দলিল উদ্দিনের সভাপতিত্বে কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. খলিলুর রহমসান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, পিপি অ্যাড. আব্দুল হালিম, জিপি অ্যাড. চৌধুরী খসরুল আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. এম এম নাসির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজগর আলী খান প্রমুখ।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি কিছুক্ষণ সমাধি সৌধের বেদীর পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন । তারপর বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করেন।
এসময় বিচারপতির স্ত্রী শ্রীমতি সুষমা সিনহা এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. আবিদ হোসেন, স্পেশাল অফিসার হোসনে আরা আক্তার, প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব মো. আনিসুর রহমান, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মাহাবুব হোসেন জমাদার, মো. মইন উদ্দিন শরীফ, গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মো. দলিল উদ্দিন, চিফ জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট মো. মতিয়ার রহমান, জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের সংগ্রহশালা, বকুলতলা চত্বর, পূর্ব পুরুষের পুরনো বসতবাড়িসহ, লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে দেখেন। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।
হুমায়ূন কবীর/এসএইচএস