ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সবার পছন্দে পিওর সুতি

মামুন আব্দুল্লাহ | প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ০৫ জুন ২০১৮

* টাঙ্গাইলের শাড়িতে আঁকা হয়েছে প্রজাপতি ও গ্রামের বিভিন্ন দৃশ্য
* সব দোকানেই সুতি কাপড়ের বাহার
* তিব্র গরমে সুতির চাহিদা বেড়েছে

রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটু সামনে মহিলা সমিতির নিচ তলায় চলছে ঈদ মেলা। ঢাকার বিভিন্ন জায়গার নারী উদ্যোক্তারা এখানে বসিয়েছেন জামা-কাপড়, গহনার পসরা। দোকানগুলোতে সুতি কাপড়ের অধিপত্য। দোকানিরা জানালেন, তিব্র গরমে সুতির চাহিদা বেড়েছে। এর আগের ঈদগুলোতে ভারতীয় সিরিয়ালের নামে নানা রকম পোশাক আসলেও এবার শুধুই সুতির চাহিদা।

কেনাকাটা করতে আসা আবিদা হাসান চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, বাজারে যে মডেলই আসুক না কেন- এবার সুতি ছাড়া অন্যকিছু ইউস (ব্যবহার) করে কেউ কমফোর্ট ফিল (আরামদায়ক) করবে না। এ জন্য সুতি কাপড়ের বিকল্প নেই। মার্কেট ঘুরলে দেখবেন, সব দোকানেই সুতি কাপড়ের বাহার। এর মধ্য থেকেই চয়েজ (পছন্দ) করে নেবো। আমার মেয়েদেরও তাই কিনে দেবো।

roja

মহিলা সমিতির মেলায় দেখা যায়, নানা রকম সুতি থ্রি পিস, ওয়ান পিস ও গাউনজাতীয় জামা-কাপড়। দাম পড়বে ১৮শ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া রয়েছে পাঞ্জাবির সমাহার। দাম পড়বে ১২শ থেকে ৪ হাজার টাকা।

দোকানি সুজানা বেগম বলেন, ‘মেলা চলবে কাল (বুধবার) পর্যন্ত। এবার সুতি জামার বিক্রি ভালো। মধ্য বয়স্ক নারীই শুধু নয়, এবার কিশোরী- তরুণীরাও সুতি জামা কিনছেন। সুতি বলতে সবাই চায় পিওর কটন (খাঁটি সুতি) কাপড়।’

মঙ্গলবার বেইলি রোডের বিভিন্ন দোকানে ঘোরে বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদ কেনাকাটা যে জমে উঠেছে সেটা অনেকটা বোঝা গেল।

roja

এখানের পুরনো দোকান টাঙ্গাইল শাড়ি কুটির। দোকানটিতে দেখা মিললো ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের শাড়ির বিশাল ভান্ডার। এই কটিরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। এর মধ্যে সিল্ক, হাস সিল্ক, হাতের কাজের শাড়ি, এমব্রয়ডারি বাল্ক প্রিন্ট, হ্যান্ড প্রিন্ট শাড়ি রয়েছে। এসব প্রিন্টের শাড়িতে আঁকা হয়েছে প্রজাপতি ও গ্রামের বিভিন্ন দৃশ্য। এ ছাড়া রয়েছে ফুলকি প্রিন্ট, টাঙ্গাইলের থান কাপড়ে মোম বাটিক, কুমিল্লার খাদি, পাটের সুতার শাড়ি, কটন মিক্সট। এসব শাড়ি ৭শ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মধ্যে কেনা যাবে বলে জানান বিক্রয়কর্মী অপু।

তিনি বলেন, এবারের তিব্র গরমে সুতি শাড়ির চাহিদা বেড়েছে। একসময় অপেক্ষাকৃত বয়স্ক নারীরা টাঙ্গাইলের শাড়ির প্রতি টান অনুভব করতেন। এখন সেদিন কিছুটা পাল্টেছে। তরুণী বা যুবা সব বয়সী নারীরা এই শাড়ির প্রতি ঝুঁকেছেন। এ কারণে টাঙ্গাইল শাড়ি উৎপাদকরা শাড়ির কাজে ভ্যারিয়েশন এনেছেন। এ জন্য ২৫ হাজার টাকা দামের তাঁতের শাড়িও এসেছে দোকানে।

এসবের বাইরে তরুণীদের জন্য রয়েছে আধুনিক ডিজাইনের শাড়ি। সবই সুতির। এর মধ্যে সুতির জামদানি, সিগুরি, ভ্যাজিটেবল ডাই রয়েছে। এসব শাড়ি পাওয়া যাবে ১৮শ থেকে ৪৫শ টাকায়।

roja

টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের অপর বিক্রয়কর্মী কামরুল হাসান বলেন, সবার জন্য আমাদের কালেকশন রয়েছে। অভিজাতরাও বাদ যাবেন না। তাদের জন্য রয়েছে কুমিল্লার সু´ খাদির ওপর জামদানি কাজ। এর দাম পড়বে ২৫ হাজার টাকা। রয়েছে বুটিক শাড়ি, দাম ৪৫শ টাকা। বালুচুরির দাম পড়বে ১৮ শ থেকে ২৬শ টাকা। মার্সলেস কটন ৩ হাজার টাকায় কেনা যাবে।

দেখা যায়, বেইলি রোডে তাঁত ছাড়াও শাড়ির জন্য আরও বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে সজনী, প্রিয় দর্শিনী, নবরূপ, বধুয়া, ঢাকায়া জামদানি অন্যতম।

roja

শাড়ি থ্রি পিসের বাইরে ছোট বাচ্চা, ছেলে বা তরুণদের জন্য অনেকগুলো দোকান আছে বেইলি রোডে। এখানে দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের সব দোকান রয়েছে। এর মধ্যে ইয়েলো, আর্টিসান, ইনফিনিটি, নায়োর, অঞ্জন্স, দেশাল, লুবনান, জেন্টাল পার্ক, রীচম্যান, ক্যাটস আই, সাদাকালো প্রমুখ।এসব দোকানে মেয়েদের নানা রকম জামা, থ্রিপিস, শাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া ছেলেদের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি।

কথা হয় ইয়েলো ব্র্যান্ডের দোকানের ম্যানেজার নাইম হোসাইনের সঙ্গে। তিনি জানান, ঈদ মার্কেট মোটামোটি জমে উঠেছে। হয়তো সামনে আরও জমবে। এবারের ঈদে প্রচুর কালেকশন এনেছে ইয়েলো। বিভিন্ন দামে এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। ফিক্সট প্রাইজের মধ্যে শার্টের দাম পড়েবে ১৬শ থেকে ২৫শ টাকা। প্যান্ট ২ থেকে ৪ হাজার টাকা, পাঞ্জাবি ২ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় কেনা যাবে। এ ছাড়া মেয়েদের জামা ও বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন দামে কাপড় রয়েছে। এর বাইরে আছে ডিজিটাল প্রিন্টের শাড়ি, যার দাম পড়বে ৩ হাজার ৪৯৫ টাকা। এসবের সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করে মূল্য পরিশোধ করতে হবে বলে জানান অপর বিক্রয়কর্মী লুবানা।

roja

জেন্টাল পার্কে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের মোটামোটি ভিড় চোখে পড়ার মতো। বিক্রয়কর্মী হাসান বলেন, এখানে শার্ট পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮৯০ থেকে ২ হাজার ৪৯০ টাকায়। প্যান্টের দাম পড়বে ১ হাজার ৮৯০ থেকে ৪ হাজার টাকা। পাঞ্জাবি ২ হাজার ৯০ থেকে ৫ হাজার ৪৯০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। টি-শার্টের বেশ কালেকশন আছে। কেনা যাবে ৬৫০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায়।

রীচম্যানে দেখা গেল, অনেকগুলো নতুন আইটেম আনা হয়েছে। ম্যানেজার হ্রদয় হাসান জানালেন, প্যান্টের দাম পড়বে ১ হাজার ২৯০ থেকে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা। শার্ট ১ হাজার ৫৯০ থেকে ৩ হাজার ৫৯০ টাকা, টি শার্টের দাম ৪৫০ থেকে ৮৫০ টাকা।

ক্যাটস আইয়ের বিক্রয়কর্মী মিজান জানান, শার্ট ও প্যান্টের জন্য আমাদের দোকানের আলাদা সুনাম আছে। এবার ঈদে নতুন নতুন আইটেম এসেছে। বিক্রিও ভালো। শার্ট ২ হাজার ২৯০ থেকে ২ হাজার ৬৯০ টাকায় কেনা যাবে। প্যান্টের জন্য ১ হাজার ৮৯০ থেকে ১ হাজার ৯৯০ টাকা, পাঞ্জাবি কিনতে লাগবে ২ হাজার ৮৫০ থেকে ৫ হাজার ৯৯০ টাকা। আর টি-শার্ট কেনা যাবে ৭৫০ থেকে ১৮৯০ টাকায়।

এমএ/জেডএ/এমএস

আরও পড়ুন