এনু-রুপনের বাসায় মিলল সাড়ে ২৬ কোটি টাকা, এক কেজি স্বর্ণালঙ্কার

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার গেণ্ডারিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার পুরান ঢাকার বাসা থেকে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা, ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআর, প্রায় এক কেজি ওজনের স্বর্ণালঙ্কারসহ বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা জব্দ করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রাজধানীর পুরান ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে র্যাব-৩ এর একটি দল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় পুরান ঢাকার ১১৯ লালমোহন সাহা স্ট্রিটে অভিযান শুরু করে। ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
অভিযান শেষে আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রাকিবুল হাসান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতিবিরোধী যে অভিযান শুরু হয়েছিল তার অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই বাড়িতে আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করি।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, নিচতলার ওই বাসায় কেউ থাকত না। বেশ সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা ছিল সবকিছু। এনু-রুপনের দুই ডজন বাড়ির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা এ বাসার সন্ধান পাই।
অভিযান শেষে জব্দ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রার ফিরিস্তি তুলে ধরে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রাকিবুল হাসান বলেন, ‘বাসাটি থেকে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআর, প্রায় এক কেজি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, ৯ হাজার ৩০০ ইউএস ডলার, ১৭৪ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ৫ হাজার ৩৫০ ইন্ডিয়ান রুপি, এক হাজার ১৯৫ চাইনিজ ইয়েন, ১১ হাজার ৫৬০ থাই বাথ ও ১০০ দিরহাম জব্দ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমরা এখন এ ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করব। এসব দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার থানায় হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হবে।
জব্দ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার কীসের বা কোথা থেকে এলো জানতে চাইলে র্যাব-৩ এর সিও বলেন, আমরা এটা তদন্ত করে বের করব। কোথা থেকে এসেছে, কার কাছে ছিল, গন্তব্য কোথায় ছিল তা ইনভেস্টিগেশন করে বের করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে বাসায় অপারেশন পরিচালনা করেছি, সেই ছয়তলা ভবনটি এনু-রুপনের বাড়ি। এর আগে তাদের আরেক বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
ওই অভিযানের পর কি এই মুদ্রা-স্বর্ণালঙ্কার এ বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে রাকিবুল হাসান বলেন, সম্পূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা এ বাসায় অভিযান পরিচালনা করেছি।
কতগুলো বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা সময়সাপেক্ষ। পরে তা জানা যাবে।
ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালক এনু ছিলেন গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তার ভাই রুপন ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে ওয়ান্ডারার্সে অভিযান চালিয়ে জুয়ার সরঞ্জাম, কয়েক লাখ টাকা ও মদ উদ্ধার করে র্যাব।
বিজ্ঞাপন
গত ২৪ সেপ্টেম্বর গেন্ডারিয়ায় প্রথমে এনু ও রুপনের বাড়িতে এবং পরে তাদের এক কর্মচারী ও তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি সিন্দুকভর্তি প্রায় ৫ কোটি টাকা, আট কেজি স্বর্ণ এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সিন্দুকে পাওয়া ওই টাকার উৎস ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো থেকে। টাকা রাখতে জায়গা বেশি লাগে বলে কিছু অংশ দিয়ে স্বর্ণ কিনে রাখতেন এনামুল।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয় এনু-রুপনকে।
বিজ্ঞাপন
ওই ঘটনার পর মোট সাতটি মামলা করা হয়, যার মধ্যে অবৈধ ক্যাসিনো ও জুয়া পরিচালনা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে চারটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।
জেইউ/এসআর/এমএস
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের প্রশ্নে একমত রাজনৈতিক দলগুলো: আইন উপদেষ্টা
- ২ উৎসুক জনতার সঙ্গে সেনা সদস্যদের ভুল বোঝাবুঝি, তদন্ত শুরু
- ৩ এখনো কোনো মরদেহ আসেনি উত্তরা- ১২ সিটি করপোরেশন কবরস্থানে
- ৪ বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
- ৫ তিন শিশু খেলতো একসঙ্গে, এখন কবরে শুয়ে আছে পাশাপাশি