হিমালয়ের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর স্বপ্ন ছিল রত্নার
হিমালয় পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন ছিল রেশমা নাহার রত্নার। বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করে হিমালয় পাড়ি দেয়ার বন্দোবস্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। পরিবারের মতের বাইরে দেশের সুনাম বয়ে আনতে আর কিছুদিন পরেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষকের হিমালয় পাহাড়ের যাত্রা করার কথা ছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যুতে তার সকল স্বপ্ন আজ বিলীন হয়ে গেল।
আজিমপুর আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন রেশমা নাহার রত্না। পেশা শিক্ষকতা হলেও বইপড়া, মৃত্যুপুরীর ভয়ানক পাহাড় পাড়ি দেয়া, সাইকেল চালানো, দৌড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে রত্নার ছিল বেশ আগ্রহ। এজন্য তিনি পর্বতারোহণের অভিযান শুরু করেন। দেশের কেওকারাডাং চূড়া, কেনিয়ার লেনানা চূড়া, ভারতের কাঙরি পর্বত ও কাং ইয়াতসে-২ সফলভাবে আরোহণ করেন। আগামী বছর তিনি হিমালয় জয়ের অভিযান শুরু করতেন।
জানা গেছে, হিমালয় পাহাড়ের চূড়ায় উঠে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিল রত্না। এ যাত্রা শুরু করতে আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন তার পরিচিত এক ব্যবসায়ীকে অনুরোধ জানান। পরে তিনি সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় সে ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। এ ব্যবসায়ী তার আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়। সড়ক দুর্ঘটনায় রত্নার সকল স্বপ্ন মাটির তলে চাপা পড়ে গেল।
শুক্রবার সকালে ২২ কিলোমিটার পথ দৌড়ের পর সাইক্লিং করার সময় রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেক রোডে মাইক্রোবাস চাপায় পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্নার (৩৩) স্বপ্ন পিষ্ট হয়ে যায়। উড়োজাহাজ মোড় থেকে লেক রোড দিয়ে গণভবনের দিকে যাওয়ার সময় লেক ব্রিজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে নড়াইল লোহাগড়া রত্নার মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রত্নার মেজ বোনের স্বামী কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, রত্না ছিল অনেক মেধাবী ও অদম্য সাহসী। ২০০৯ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলেও পাহাড় পাড়ি দেয়া, সাইকেল রেসিং দৌড়ানো, বইপড়া ছিল তার এক রকম নেশা। মিরপুরের একটি এলাকার সরকারি বাসভবনে থাকত। পরিবারের সকলে নিয়মিত তার খোঁজখবর নিত। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, রত্নার পরিবারের চার বোন ও তিন ভাই রয়েছে। গত তিন বছর আগে তাদের মা মারা গেলে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা বীর বিক্রম খেতাবধারী বাবা ক্যাপ্টেন আফজাল হোসেন সিকদার পরিবারটিকে দেখভাল করে আসছেন। রত্নার ইচ্ছেগুলোকে পরিবারের পক্ষ থেকে খুব বেশি সহযোগিতা করা না হলেও অধিক আগ্রহ নিজের ইচ্ছার কারণে তা বাস্তবায়ন করে চলছিলেন। রত্নার হত্যাকারী ঘাতককে শনাক্ত করে উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা।
এমএইচএম/এমআরএম
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা অস্বীকারকারীদের সামরিক ইতিহাস জ্ঞান নেই
- ২ ফয়সাল করিম মাসুদের জামিনের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্পর্ক ছিল না
- ৩ হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন, দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান
- ৪ যুগ্ম সচিবকে নিজের গাড়িতে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা দাবি চালকের
- ৫ কোরিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে, আশা ড. ইউনূসের