ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

গুলিস্তানের ‘একমাত্র’ জাল বিক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

‘আপনি এখন ঢাকার কোথাও মাছ ধরার জাল খুঁজে পাবেন না। বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে জিঞ্জিরায় গেলে পাবেন। কিন্তু ৮- ১০ বছর আগেও মতিঝিল-গুলিস্তানে অনেক জালের দোকান ছিল। এখন এইদিকে আমি একাই জাল বিক্রি করি।’

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর দিলকুশার রাজউক ভবনের সামনে ফুটপাতে জাল বিক্রেতা কালাম এই কথাগুলো বলছিলেন।

ইন্টারনেটের যুগে মাছ ধরার জালের প্রয়োজনীয়তা কমে গেলেও তিলোত্তমা ঢাকার খালগুলো থেকে একসময় নিয়মিতই ধরা হতো মাছ। তখন সুখের দিন ছিল জাল ব্যবসায়ীদের।

কালের বিবর্তনে রাজধানীর খাল-বিলগুলো জৌলুস হারিয়েছে। দখল আর দূষণে নগরীর চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর খালগুলো নালা-ডোবায় পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ জায়গাতেই পুরোপুরি অস্তিত্ব হারিয়েছে খাল। আর ক্রেতার অভাবে পেশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন জাল ব্যবসায়ীরা।

কিন্তু ১২ বছর ধরে জাল বিক্রি করেন ২৫ বছর বয়সী কালাম। ফুটপাতের এই দোকানটা মূলত তার চাচার। কিন্তু জাল বিক্রি তার কাছে নেশার মতো। তাই পেশায় ফার্নিচার মিস্ত্রি হলেও প্রতিদিনই জালের দোকানে থাকেন এই তরুণ।

gulistan-net-(3).jpg

ঝাঁকি জাল, বেড়া জাল, ফেলানি জাল মূলত বিক্রি করেন তিনি। এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে মান ও দৈর্ঘ্য ভেদে বাড়ে জালের দাম। হাতে বানানো ঝাঁকি জাল বিক্রি হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায়।

জাগো নিউজকে কামাল বলেন, ‘এখন তো হাতে বানানো জালের বিক্রি কম। এখন সব মেশিনে হয়। জিঞ্জিরা, মুন্সিগঞ্জ থেকে জালা বানায়া আনি।’

রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি বা হাতিরঝিলে মাছ ধরতে লাগে অনুমতি। বিভিন্ন সময় শখের বসে অনেকেই এসব জায়গায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। তাহলে এই জালের ক্রেতা কে? প্রতিদিন কি পরিমান তার বিক্রি হয়?

কামালের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বারে। তার দোকানের রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ক্রেতা। এই ক্রেতারা ঠিকই চলে আসেন তার কাছে। পরিচিতদের কাছ থেকে শুনে আসেন নতুন ক্রেতারা। এভাবেই চলছে গুলিস্তানের ‘একমাত্র’ জাল বিক্রেতার ব্যবসা।

তিনি বলেন, ‘যারা চেনে তারা ঠিকই আসে এখানে। অনেকের গ্রামে প্রজেক্ট আছে, পুকুর আছে সেইখানে শখ কইরা মাছ ছাড়ে। মাছে ধরে জাল দিয়া। তারা আমার থেকে (জাল) নেয়।’

কামাল আরও বলেন, ‘শীত মৌসুমে বিক্রি কম হয়। পুরো মাসে ১০ থেকে ১২টা জাল বিক্রি হয়। যেমন গত তিন দিনে কোনো বিক্রি নাই। তবে বর্ষায় বিক্রি বাড়ে। প্রতিদিনই ৩-৪ টা জাল বিক্রি করি। শুধু জাল বিক্রি করি না জাল সেরেও দেই। এখানে ছেঁড়া জাল দিয়ে গেলে আমরা সেলাই করে দেই।’

সারাইয়ে কেমন খরচ হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিক নাই। একেকটা একেক দাম লাগে।’

কালাম বলেন, ‘আমি এইখানে জাল বিক্রি করি। যাত্রাবাড়িতেও দোকানে কাজ করি। জালের ব্যবসা এখন কম। তবে চাচা এইখানে জালের দোকান রাখবেন। যতদিন চাচা চালায় ততদিন থাকবে এই দোকান।’

এসএম/এসএস/এমএস