কর্মীদের বেতন-বোনাস দিতে প্রণোদনা চায় ক্ষতিগ্রস্ত মাদার টেক্সটাইল
শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ও বেতন দিতে সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা চেয়েছে সম্প্রতি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত গাজীপুরের কাশিমপুরের পোশাক কারখানা মাদার টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।
বুধবার (২১ এপ্রিল) জাগো নিউজকে বিষয়টি জানান কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এলিজা সুলতান।
তিনি বলেন, ‘১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমার কারখানায় আগুন লাগে। হঠাৎ বিকট শব্দ করে আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কারখানার ব্লোয়িং সেকশন, ড্রায়িং সেকশন ও কার্ডিং সেকশনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট পরদিন সকাল ৮টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। আমার কারখানায় মোট ৫টি ইউনিট ছিল, তার মধ্যে ৩টিই পুড়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
মাদার টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড প্রায় ২ হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ৬ হাজার মানুষের ভরণ-পোষণের উৎস এই কারখানা। এ তথ্য জানিয়ে এলিজা সুলতান বলেন, ‘আমার কারখানায় এখন উৎপাদন পুরোটাই বন্ধ। এখন সামনে ঈদ। তাদের বেতন ও ঈদের বোনাস কীভাবে দেব, বুঝতে পারছি না।’
এমন পরিস্থিতিতে তিনি বলছেন, ‘গত বছর করোনার সময় আমরা সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের কিছুই পাইনি। এবার সরকার প্রণোদনা থেকে ঈদের বোনাসটা দিয়ে আমাকে যেন সহযোগিতা করে।’

এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখন আমার যে দুটি ইউনিট আছে, এগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া আমার আর কোনো রাস্তা নাই। অল্প সময়ের মধ্যে এই দুই ইউনিটকে রফতানিতে নিতে পারলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারব। এজন্য আমার ঋণপত্রের যে সুবিধা, এলসি খোলার সুবিধা বন্ধ আছে, সেটা দিতে হবে। আমি তো লোকাল থেকে তুলা কিনে কিনে মিল চালাচ্ছিলাম। এই ঋণপত্রের সুবিধা পাশ করা আছে ব্যাংকে। কিন্তু ব্যাংক আমাকের সুযোগটা দেয়নি। এই সুযোগটা যদি দিয়ে দেয়, তাহলে আমি রফতানিতে চলে যাব। অন্তত দুইটা ইউনিট এক্সপোর্টে গেলে লোকালে আমি যে সুতা ৫০ টাকায় বিক্রি করি, সেটা যদি ৪ ডলারে বিক্রি করতে পারবো, তখন আমি ১ বছরের মধ্যে শ্রমিকদের নিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারবো। আমার যেটা পাশ করা আছে, ব্যাংক ধরে রেখেছে, এটা তারা ছেড়ে দিক। এছাড়া তো আমি কোনো রাস্তা দেখতে পারছি না।’
এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদে মেশিন বসিয়ে পুনরায় কারখানা চালু করার ক্ষেত্রেও সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছে মাদার টেক্সটাইল।
বুধবার এসব বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনকে (বিটিএমইএ) চিঠিও দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাটি। এলিজা সুলতানা বলেন, ‘তারা বলেছে, সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।’
আগুন লাগলেও বীমার সহযোগিতা না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে এলিজা সুলতানা বলেন, ‘রূপালী ব্যাংকের কিস্তি কিছুদিন আগে দিলাম। তাদেরকে বললাম যে, বীমার চেক দিয়ে রাখেন, আমরা দেব কয়েকদিন পরে। এ বীমার চেকের ক্লিয়ারেন্স হয় নাই, টাকা পরিশোধ হয় নাই। বীমার কিস্তি অনিয়মিত রয়ে গেছে। কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
পিডি/এসএস/এমএস