বাসাবাড়ি থেকে ল্যাপটপ চুরির পর বসুন্ধরায় বিক্রি করতেন তারা
ফাঁকা বাসাবাড়ি আগে থেকে রেকি করত একটি চোর চক্র। পরে সময়-সুযোগ বুঝে ফাঁকা বাসার গ্রিল কেটে ও তালা ভেঙে রুমে ঢুকে ল্যাপটপ, মোবাইল, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতেন তারা। এভাবে গত দুই বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চুরি করতো চক্রটি। এমনকি চোরাই ল্যাপটপ তারা বিক্রি করতো রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে।
সম্প্রতি রাজধানীর লালবাগের একটি ভবনের ফাঁকা তিনটি বাসা থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল, নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে এ চোর চক্র। চক্রের সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন-মো. সঞ্জীব (২৪), মো. হেলাল উদ্দিন (২৪), মো. রনি (৩০), মো. রিপন (৩২), মো. তরিকুল ইসলাম (৩০), মো. শামীম (২৩) ও মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৩)। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪৮টি ল্যাপটপ ৫টি মোবাইলফোন ও নগদ ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন>>> এক ল্যাপটপের খোঁজে গিয়ে পুলিশ পেলো ৪৮টি, গ্রেফতার ৭
রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা প্রথমে একটি বাসা রেকি করে। বাসা ফাঁকা থাকলে সেই বাসায় টার্গেট করে চুরি করে। মূলত যে বাসাগুলোতে সিকিউরিটি থাকে না এমন বাসা টার্গেট করে তারা।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে চোর চক্রের চারজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর চুরি যাওয়া একটি মোবাইলের সূত্র ধরে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে চোরাই ল্যাপটপ কেনাবেচার কথা জানা গেছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া দুটি ল্যাপটপসহ চোরাই ৪৮টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। দোকানদার সুমন গ্রেফতার রনির কাছ থেকে কম দামে চোরাই ল্যাপটপ কেনেন।

ডিসি জাফর হোসেন বলেন, গ্রেফতাররা শনিরআখড়ায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেখান থেকেই এভাবে চুরি করার জন্য একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হন গ্রেফতাররা। রাজধানীর কদমতলী, সূত্রাপুর, কলাবাগ, লালবাগ ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগালে এমন চুরি থেকে কিছু রেহাই মিলতে পারে অথবা চুরি হলেও সহজেই চোরদের ধরা যাবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন>>> ল্যাপটপ-মোবাইল হারিয়ে বিপাকে ভুক্তভোগীরা, উদ্ধারে ধীরগতি
ল্যাপটপ চুরির পর কারও ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও কিংবা তথ্য ফাঁস করে দিতেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে লালবাগ বিভাগের ডিসি বলেন, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানটি চোরাই ল্যাপটপ কম দামে কিনতেন। এরপর সেগুলো ফরম্যাট দেওয়ার পর উইন্ডোজ দিয়ে বিক্রি করে দিত। তারা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস কিংবা ফাঁসের হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন না।
উদ্ধার ৪৮ ল্যাপটপের মালিকানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিআইডির ল্যাবে ফরেনসিক করে ল্যাপটপের মালিকানার তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
টিটি/এমআইএইচএস/জেআইএম