ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

মেয়ে তুমি গান গাও? নাচো? লেখালেখি করো? এত সাহস!

মাহফুজা অনন্যা | প্রকাশিত: ০৯:০২ এএম, ১৪ জুলাই ২০২৫

তুমি গান গাও? নাচো? কবিতা পড়ো? লেখালেখি করো? এত সাহস! তুমি তো ‘ভদ্র মেয়ে’ নও!

এই বাক্যটিই যেন আধুনিক বাংলাদেশের অনেক মানুষের অদৃশ্য মুখবন্ধ। যার প্রমাণ আমরা আবারও পেলাম, যখন এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী, সংস্কৃতিমনা মেয়ের বিয়ে ভেঙে গেলো—শুধু এই কারণে যে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সক্রিয়। সে গান গায়, কবিতা পড়ে, কখনো মঞ্চে নৃত্য করে। এই ‘খবর’ যখন ছেলেপক্ষের কানে আসে, শ্বশুরমশাই রীতিমতো ধমক দিয়ে, পারিবারিক সম্মান ও ‘ভবিষ্যতের গৃহিণী’র আদর্শিক ছবির কথা বলে সম্পর্কটি ভেঙে দেন। (এই ঘটনার সত্যাসত্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের সমাজমানস এমনই)

ঘটনার সত্যাসত্য যাই হোক, বিয়ে ভাঙা এ যুগে বিচিত্র কিছু নয়। কিন্তু এই সম্পর্ক ভাঙার নেপথ্যে যে কূপমন্ডুক মানসিকতা কাজ করেছে, সেটিই আমাদের ভাবিয়ে তোলে। মেয়েটির ‘সংস্কৃতিচর্চা’কে একাংশের চোখে দেখা হয়েছে ‘আধুনিকতার নামে বেহায়াপনা’ হিসেবে। অথচ অন্যদিকে সমাজের শিক্ষিত ও বিবেকবান মানুষজন এই ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও বেদনা প্রকাশ করছেন। তাহলে নারীর শিক্ষা ও ব্যক্তিত্ব কি শুধুই সনদ?

স্তন বড় হওয়া একটি শারীরবৃত্তীয় ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এতে কোনো পুরুষের শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন বা প্রভাব নেই। শারীরিক সংস্পর্শ স্তনের আকার বাড়ায় না। স্তনে পুরুষের ছোঁয়া বা শারীরিক সম্পর্কের কারণে স্থায়ীভাবে স্তনের আকার বড় হয়ে যায় — এ কথা শুধু মিথ এবং কল্পনাজনিত।

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও একজন মেয়ের গান গাওয়া, নাচ করা, কবিতা পাঠ কিংবা প্রকাশ্যে আবৃত্তি করাকে ‘ভদ্রতা হারানো’ কাজ বলে ভাবা হয়—এটি নিছক দুঃখজনক নয়, এটি একটি পচে যাওয়া সমাজচেতনার বহিঃপ্রকাশ। একজন নারী যখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, তিনি শুধু পাঠ্যবই মুখস্থ করেন না। তিনি নিজের বোধ, স্বর, রুচি ও চিন্তাশক্তি গড়ে তোলেন। তিনি গান গাইলে তার কণ্ঠে উঠে আসে সমাজের গল্প; কবিতা পড়লে—জেগে ওঠে আত্মার জিজ্ঞাসা; নৃত্যে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন সময়ের স্পন্দন। তবে সমাজ এখনো চায় না একজন নারী তার গলা ছেড়ে গান করুক। তারা চায়—সে হয় তো চিকিৎসক হোক, শিক্ষক হোক, কিন্তু গান যেন না গায়, নাচ যেন না করে কারণ ‘শিল্পী’ শব্দটি এখনো এ সমাজের কিছু মানুষের চোখে লজ্জার।

আমাদের দেশে বিয়েকে এখনো অনেকাংশে একধরনের ‘লড়াইয়ের মঞ্চ’ ভাবা হয়, যেখানে মেয়েটির পেছনের সবকিছু খুঁটিয়ে দেখে তার চরিত্র নির্ণয় করা হয়। সে আগে কারও সাথে কথা বলেছে কি না, ফেসবুকে ছবি দিয়েছে কি না, বন্ধুবান্ধব নিয়ে কোথাও গেছে কি না কিংবা সাংস্কৃতিক মঞ্চে উঠেছে কি না—এই সবকিছুর ওপর ভিত্তি করে বিচার হয় সে ‘ভালো মেয়ে’ কি খারাপ মেয়ে? এই বিচার যে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার কঙ্কাল—তা কেউ স্বীকার করতে  চায় না। কারণ তাতে অনেকের মুখোশ খুলে যাবে। বিয়ের আগে পুরুষ যদি ‘অভিনয় করে’, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়, গানে-আড্ডায় মেতে থাকে—তবুও সমাজ তা ‘পুরুষালি স্বাধীনতা’ বলে দেখায়। কিন্তু একটি মেয়ে মঞ্চে উঠলেই—তাকে বানিয়ে ফেলা হয় ‘সংস্কারের বাইরে’ একজন নারী। তবে বিয়ে কি চরিত্র নির্ণয়ের যন্ত্র? কোনো মেয়ে গান গায়, নাচে, মানে সে সাহসী; চরিত্রহীন নয়।

মেয়েটির কোনো দোষ নেই। সে নিজের ভালোবাসা থেকে গান গেয়েছে, নিজের আত্মিক শক্তি থেকে কবিতা পড়েছে, নাচের ছন্দে মঞ্চ কাঁপিয়েছে। সে সমাজের এক শক্তিশালী প্রতিনিধি—যে ভয় না পেয়ে নিজের ভেতরের শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখার ভূমিকা নিয়েছে। কিন্তু সমাজ তাকে কী দিলো? সামাজিক মন্তব্যের বিষ, সম্ভ্রমহানির অশ্রাব্য ভাষা, ভেঙে যাওয়া বিয়ের আঘাত, ‘ভালো মেয়ে’ হওয়ার পরীক্ষায় ফেল করার অপবাদ! এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েটির ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করে কটূক্তি মন্তব্য করা হয়েছে। কেউ বলেছে– মেয়েটির বুকের কাপড় বারবার সরে যাচ্ছে–অতএব মেয়েটি খারাপ, কেউ বলেছে–মেয়েটি অবিবাহিত হলে স্তন এত বড় কেন, নিশ্চয়ই অনেক হাত পড়েছে!

চিন্তা করুন, এ যুগে এসে এমন কথাও একটি মেয়েকে হজম করতে হয়! এটি একটি ভুল, অবৈজ্ঞানিক এবং সামাজিকভাবে বিভ্রান্তিকর ধারণা, যে নারীর স্তন বড় মানেই তাতে কোনো পুরুষের ছোঁয়া লেগেছে বা মেয়েটির সাথে যৌন সম্পর্ক হয়েছে। এই ধরনের মন্তব্য বা বিশ্বাস শুধু অবৈজ্ঞানিক অপব্যাখ্যাই নয়, ভিত্তিহীন! বরং তা নারীকে ছোট করার, অবমাননা করার এবং ভুলভাবে মূল্যায়ন করার একটি চর্চা, যা সমাজে নারীর প্রতি বিদ্যমান কুসংস্কার ও লিঙ্গবৈষম্যকে উসকে দেয়।

বৈজ্ঞানিকভাবে এ ধারণা কেন ভুল তার যৌক্তিক ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। স্তনের আকার নির্ভর করে হরমোন, জিন ও শরীরের চর্বির পরিমাণের ওপর। স্তনের আকার বড় হওয়া বা পরিবর্তিত হওয়া অনেকগুলো প্রাকৃতিক কারণেও হয়; যেমন এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণে পার্থক্য, জেনেটিক (বংশগত) বৈশিষ্ট্য, দেহের চর্বির পরিমাণ, ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, বয়স ও মেনোপজ, গর্ভাবস্থাও স্তন্যদানকালীন শারীরিক পরিবর্তন। অর্থাৎ, স্তন বড় হওয়া একটি শারীরবৃত্তীয় ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এতে কোনো পুরুষের শারীরিক স্পর্শের প্রয়োজন বা প্রভাব নেই। শারীরিক সংস্পর্শ স্তনের আকার বাড়ায় না। স্তনে পুরুষের ছোঁয়া বা শারীরিক সম্পর্কের কারণে স্থায়ীভাবে স্তনের আকার বড় হয়ে যায়— এ কথা শুধু মিথ এবং কল্পনাজনিত। সাময়িক উত্তেজনায় স্তনে সামান্য ফোলা বা রক্তসঞ্চালন বাড়তে পারে, কিন্তু তা অস্থায়ী এবং ক্ষণিক৷

যৌন উত্তেজনায় পুরুষ ও নারীর শরীরে কিছুক্ষণ অল্প পরিবর্তন হয়— কিন্তু সেগুলো স্থায়ী রূপ নেয় না। নারীদের স্তনের আকার ছোট বা বড় হওয়া এটি একান্তই স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় বিষয়। এই পার্থক্যের পেছনে রয়েছে একাধিক শারীরিক, হরমোনজনিত, বংশগত এবং পরিবেশগত কারণ। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়, স্তনের গড়ন বা আকার আসলে নারীর সৌন্দর্য নয়, বরং তার দেহের জৈবিক গঠন ও হরমোনগত প্রভাবেরই একটি প্রতিফলন। স্তনের গঠন মূলত চর্বি ( fatty tissue), গ্রন্থি (glandular tissue) ও সংযোজক কলা (connective tissue) দিয়ে তৈরি। নারীদের স্তনদ্বয় প্রজননের সাথে যুক্ত হলেও এগুলোর গঠন ও বৃদ্ধি শরীরের বেশ কিছু বিষয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, স্তনের আকার অনেকাংশেই জেনেটিক কারণে নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ মা, বোন বা পরিবারের নারীদের স্তনের গঠন যেমন, অনেকাংশে মেয়েটির ক্ষেত্রেও তা প্রভাব ফেলতে পারে।

ডা. শর্মিষ্ঠা সেন, স্তনবিশেষজ্ঞ ( Breast Oncologist) বলেন: “স্তনের গঠন কোনো রোগ বা সৌন্দর্যের মাপকাঠি নয়। এটি মূলত জিনের প্রভাবে নির্ধারিত একটি শারীরিক বৈশিষ্ট্য “। স্তনের বৃদ্ধি প্রধানত এস্ট্রোজেন ( Estrogen)  এবং প্রজেস্টেরন(Progesterone ) নামক নারীর হরমোনের প্রভাবে ঘটে। বয়ঃসন্ধিকালে যখন এই হরমোনগুলো দেহে বাড়তে থাকে, তখন স্তনের আকার বাড়ে। কারও হরমোন নিঃসরণ বেশি হলে তার স্তনের আকার তুলনামূলক বড় হতে পারে। যেসব সময়ে স্তনে পরিবর্তন দেখা যায় বয়ঃসন্ধিকালে, গর্ভাবস্থায়শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়, ঋতুস্রাবের সময়, মেনোপজের পর। এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা. মেহরীন হোসেন বলেন: “দেহের ওজন, খাওয়ার ধরন এবং হরমোনগত ভারসাম্য স্তনের আকারে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। এটিকে সৌন্দর্য বিচার করার মাপকাঠি হিসেবে না দেখে, একজন নারীর স্বাস্থ্যগত প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করাই সঠিক”। স্তন নিজে মাংসপেশী নয়, কিন্তু স্তনের নিচে পেশি থাকে — যাকে বলা হয় Pectoral Muscle. ব্যায়ামের মাধ্যমে এই পেশিগুলো টোনড বা গঠিত হলে স্তন উঁচু বা সুশৃঙ্খল দেখাতে পারে। তবে এতে আকারে খুব বড় পরিবর্তন আসে না।

গর্ভাবস্থায় স্তনের গ্রন্থিগুলো দুধ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়, ফলে সেগুলো ফুলে ওঠে। সন্তান প্রসবের পর স্তনের আকার পরিবর্তিত হতে পারে। তবে অনেক সময় পরে আবার ছোট হয়ে যেতে পারে, আবার অনেকের বেশি ফ্যাট জমে থেকে যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, চর্বির বণ্টন পরিবর্তিত হয় — তাই স্তনের আকারেও পরিবর্তন আসে। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। স্তনের আকার ও যৌন সক্ষমতার কোনো সম্পর্ক নেই। বড় স্তন মানেই বেশি নারীত্ব–এই ধারণা ভ্রান্ত। ছোট স্তন মানেই হরমোনের সমস্যা বা বন্ধ্যাত্ব– এটি একেবারে ভুল। স্তনের আকার বদলানোর জন্য বাজারে থাকা বিজ্ঞাপনভিত্তিক ক্রিম বা তেল বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। স্তনের আকার নারীদেহের একটি স্বাভাবিক বৈচিত্র্য। কেউ বড় স্তনের অধিকারী হবেন, কেউ ছোট — এটা কোনো সমস্যা নয়। বরং স্বাস্থ্যবান, আত্মবিশ্বাসী এবং নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতন থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সমাজে প্রচলিত সৌন্দর্য-বিচার ব্যবস্থার বাইরে বেরিয়ে এই বৈচিত্র্যকে সম্মান করাটাই হওয়া উচিত নতুন চিন্তার সূচনা। সমাজে প্রচলিত ভুল ধারণা মূলত গড়ে ওঠে—নারীর যৌনতা নিয়ন্ত্রণের মনোবৃত্তি থেকে, কৌতুক বা গুজব ভিত্তিক ‘লোক মুখে প্রচলিত কথাবার্তা’ থেকে, অশিক্ষা ও যৌনস্বাস্থ্য সম্পর্কে অপর্যাপ্ত জ্ঞান থেকে। এই ধারণা নারীর সম্মানহানিকর এবং যৌন হয়রানির একটি সূক্ষ্ম সামাজিক রূপ। অনেক নারী এই ভুল ধারণার কারণে দুশ্চিন্তা বা লজ্জায় ভোগেন, এমনকি শরীর নিয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। আবার, কেউ কেউ জোর করে নিজের শরীরের "আদর্শ শেপ" বানাতে গিয়ে অসংখ্য অপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবহার করেন যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

মনোরোগ চিকিৎসক মাহফুজা সুলতানা  বলেন: যে সমাজে শরীরকে লজ্জা বা সন্দেহ চোখে দেখা হয় সেখানে এই ধরনের ভুল তথ্য দ্রুত ছড়ায় যৌনশিক্ষা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য চর্চা জরুরি। নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা বিস্তার করা দরকার। শরীরকে শ্রদ্ধা করা, তার বৈচিত্র্যকে স্বাভাবিকভাবে দেখা জরুরি। সমাজে প্রচলিত মিথ ও কুসংস্কার দূর করতে গণমাধ্যম, শিক্ষক, চিকিৎসক ও পরিবারকে ভূমিকা নিতে হবে। নারীর স্তন বড় হওয়া মানেই তার উপর পুরুষের ছোঁয়া পড়েছে— এ ধারণা বিজ্ঞান বিরোধী, লিঙ্গ বৈষম্যমূলক, এবং ক্ষতিকর সামাজিক মানসিকতা। নারীর শরীর ও তার পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক, জৈবিক এবং বায়োলজিক্যাল প্রক্রিয়া যা কোন স্পর্শের উপর নির্ভর করে না। এই ধরনের কল্পনা ও অপমানজনক কথাবার্তা নারীর সম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনতা আঘাত করে — যা আমাদের সচেতনভাবে রুখে দিতে হবে।

সময় এসেছে, বিয়ের সংজ্ঞা নিয়ে নতুন করে ভাবার। বিয়ে শুধু দুজন মানুষের নয়, দুইটি ব্যক্তিত্বের, দৃষ্টিভঙ্গির ও সম্মানবোধের মিল। যেখানে একজন নারী নিজেকে লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়, সে বিয়ে সহানুভূতির মুখোশে নির্মমতা লুকায়। সংস্কৃতি মানে মুক্ত চিন্তা, উন্মুক্ত মন।

যারা সংস্কৃতিকে অপবিত্র মনে করে, তারা আসলে নিজের অজ্ঞতা ঢাকতে চায়। এমন সংস্কৃতিহীন পরিবারে কোনো সুশিক্ষিত নারীর বিয়ে হতে পারে না। সাংবাদিকমহল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পারিবারকে সচেতন হতে হবে। এমন ঘটনায় মেয়েদের নয়, সমাজের মানসিকতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। মেয়েটিকে অপমান নয়, সম্মান দিতে হবে—যে সে একা দাঁড়িয়েছে মঞ্চে, গানের সুরে। একজন নারী গান গাইলে, কবিতা পড়লে বা নৃত্য করলে—সে আর দশটা মানুষের চেয়ে বেশি জীবন্ত, বেশি আলোকিত। তার বিবাহিত হওয়া না হওয়া তার জীবনের মূল পরিচয় নয়। আজ তাকে নিয়ে যারা কটাক্ষ করলেন, কাল তারাই নিজের মেয়ের গলার সুরে জীবন খুঁজবেন।

দিন যাবে, এই সমাজ বদলাবে, কণ্ঠরুদ্ধ মেয়েটির মঞ্চ আরও উজ্জ্বল হবে—এ বিশ্বাসে আমাদের দাঁড়াতে হবে মেয়েটির পাশে। আজ না হয় কণ্ঠরুদ্ধ হলো তার, কিন্তু কাল সে গাইবেই: আগুনের দিন শেষ হবে একদিন…

লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক।

এইচআর/জিকেএস

আরও পড়ুন