ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

দীর্ঘস্থায়ী বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি আছে তো?

সম্পাদকীয় | প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ২৫ জুলাই ২০২০

চলছে করোনা মহামারি কাল। এরমধ্যে বন্যা এসেছে ‘মড়ার ওপর খাড়ার ঘাঁ’ হিসেবে। বন্যার্ত মানুষজন চরম দুর্ভোগে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

১৯৮৮ সালের পর বাংলাদেশে এবারের বন্যা সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। দেশে বন্যার পানি এখনও বাড়ছে, তা আগামী মাসের আগে কমবে এমন সম্ভাবনাও কম। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের ১৮টি জেলার ২৪ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে অন্তত ৫৬ হাজার মানুষ। দেশে বন্যার প্রভাবে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ বছর বন্যায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁধ ও বাঁধের মতো বন্যা নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামোগুলো। উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে প্রতিদিনই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। নদ-নদীতে পানি বাড়ছে, দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। পানিবন্দি মানুষ দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে।

বন্যার হাত থেকে বাঁচার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। নদী-খাল দখল বন্ধ করতে হবে। ইতোপূর্বে ঢাকার চারপাশের নদী বাঁচানোর জন্য হাইকোর্টকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কিন্তু দখল বন্ধ হচ্ছে না। একদিকে উচ্ছেদ অভিযান চলে অন্যদিকে নতুন করে দখল হয়। এই সাপলুডু খেলায় শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় দখলকারীরাই। অথচ নদী দখল বন্ধ করতে না পারলে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।

পরিবেশ সচেতনতার এ যুগে নদীর অপমৃত্যু হবে আর সকলে চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। দখলকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া নদী দখল বন্ধ করা যাবে না। নদী দখলে একটি দুষ্টচক্র অত্যন্ত ক্রিয়াশীল। এ চক্র ভাঙতে হবে। প্রশাসনের কোন গাফিলতি থাকলে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা নদীমাতৃক বাংলাদেশকে তার আপন মহিমায় দেখতে চাই।

বন্যা এবার দীর্ঘমেয়াদী হচ্ছে। এজন্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিতে হবে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ। পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্যা চলে যাওয়ার পর যে সমস্ত রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা দেয় সেগুলোর ব্যাপারেও নিতে হবে আগাম প্রস্তুতি। বন্যার কারণে পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ উছিলায় নিত্যপণ্যের দাম যেন না বাড়ে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

এইচআর/এমএস