ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

অবরোধ চলবেই : ২০ দলীয় জোট

প্রকাশিত: ১১:২১ এএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

চুড়ান্ত আন্দোলনের অংশ হিসেবে চলমান অবরোধ বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে ২০ দলীয় জোট। শনিবার জোটের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্রমাগতভাবে মানুষের অধিকারগুলো সংকুচিত করেছে। বিশেষভাবে গণতন্ত্রে যে বিরোধী দলের বিশেষ একটি জায়গা আছে সেটিকে তারা কখনই বিশ্বাস করেনি। গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের সকল কর্মকাণ্ডকে বানচাল করতে তারা দমননীতি অবলম্বন করেছে। তাদের দমননীতি অমানবিক, মধ্যযুগীয় এবং নাজি ফ্যাসিস্টদের সমতুল্য।

শুধুমাত্র কথা বলা, সভা, সমাবেশের অধিকারগুলোই তারা হরণ করেনি বরং নাজিদের কায়দায় বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দকে অবরুদ্ধ, কারারুদ্ধ, মিথ্যা মামলা, অনেককে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সমাজের নানাস্তরের মানুষসহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুম, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারের নির্মম শিকার হতে হয়েছে। ফলে এই পৈশাচিক দুঃশাসনকে মোকাবেলা করার জন্য ২০ দলীয় জোট গঠন হবার পর থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের হারানো অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

২০ দলীয় জোটের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের হত্যা করে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর আওয়ামী মহাজোট সরকার অবৈধ একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করে আরো বেশি নির্দয় ও নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, বাক, ব্যক্তি ও সমাবেশের অধিকার আদায়, সর্বত্র নিরাপত্তাহীনতা থেকে দেশের মানুষের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দূরীভূত করতে গণমানুষের অবরোধ কর্মসূচির ওপর সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর কাপুরুষোচিত বর্বর হামলার নিদর্শনগুলো দেখলে মনে হয় সরকার মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০ দলীয় জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ১৪ দিন ধরে নিজ কার্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ রেখে কার্যালয়ের চারদিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ইট, বালু, কাঠের ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড করে রাখা, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং দেশব্যাপী শত সহস্র নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক রাখা, হাজার হাজার নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের, প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা, এজেন্টদের দিয়ে যানবাহনে আগুন লাগিয়ে পরিকল্পিত নাশকতা করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানো, প্রকাশ্যে বুকে গুলি করার নির্দেশ ইত্যাদি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এখন এদেশে বিরাজমান।

২০ দলীয় জোটের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এই অবৈধ সরকারের অগ্রহণযোগ্য ও নিষ্ঠুর দুর্ব্যবহারের কবলে গোটা জাতি আজ অপমানিত। গত পরশু বিজিবি মহাপরিচালক এবং গতকাল মহাপুলিশ পরিদর্শকের বক্তব্য জাতিকে স্তম্ভিত ও হতবাক করেছে। ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং এখতিয়ার বহির্ভূত এই বক্তব্য জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিজিবি’র হাতে মারণাস্ত্র জনগণের টাকায় কেনা। এটি কোনো দল বা ব্যক্তির প্রাইভেট বাহিনী নয়। পুলিশের আইজি বিএনপি চেয়ারপারসন সম্পর্কে যেভাবে বক্তব্য রেখেছেন তাতে মনে হয় একজন ছাত্রলীগের নেতা পুলিশের পোশাক পরে বক্তব্য রাখছে। পুলিশের আইজি’র বক্তব্য নজিরবিহীন ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ। তাদের মনে রাখা উচিৎ কোনো অপকর্মই কখনো চিরদিনের জন্য মাটিচাপা থাকেনা। জনগণ সকল ঔদ্ধত্য, অহংকার এবং নিষ্ঠুর অনাচরের বিচার করবেই।

বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোট দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের আটককৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়েছে।

চলমান অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবার পর থেকে এ পর্যন্ত সরকারি বাহিনীর গুলিতে এবং সরকারের নিষ্ঠুর আক্রমণে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

এমএম/আরএস