৩৬তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারি মেলায় বাংলাদেশ

কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো ৩৬তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।

মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে ১০-১২ জুলাই তিন দিনব্যাপী এই মেলায় বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ৪৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ৭৫৩টি বুথে অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারী অন্য দেশ হলো চীন, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, জাপান এবং ইরান।

মালয়েশিয়া প্রোমাস ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সোসাইটি এবং ইএস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট মেলার আয়োজন করে। ১১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা উদ্বোধন করেন মালয়েশিয়ার প্ল্যান্টেশন ও কমোডিটিস মন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সেরি জোহারি বিন আবদুল গনি।

শনিবার (১২ জুলাই) মেলার শেষদিন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান বিজনেস ম্যাচিং অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে গুয়াংডং ফুড অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিনারি ট্রেডস অ্যাসোসিয়েশন, পেনাং ইমপোর্টার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, তেওচিউ মার্চেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন পেনাং, মালয়েশিয়া পেনাং এলিট ওমেনপ্রেনার’স অ্যাসোসিয়েশন এবং দেওয়ান পারনিয়াগান উসাহাওয়ান মালয়েশিয়ার সদস্যসহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়, যা গ্রহণ করেন হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।

পরে অতিথিসহ হাইকমিশনার মেলার স্টলসহ বাংলাদেশের দুটি স্টল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশনের স্টলে আগত ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন রপ্তানি পণ্য সম্পর্কে অবহিত করেন। পরিদর্শনের সময় আয়োজক প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়া প্রোমাস ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ও ই এস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দাতো চং চং তিক এর প্রেসিডেন্ট দাতো সেরি আবু হাসান বিন মো. নূর, মো. সেলিম ভূঁইয়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ মালয়েশিয়া, টাইলর তাসিন, বিভাগীয় প্রধান (বিপণন), প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাইকমিশনার জানান, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য বেশি করে রফতানির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন পণ্যের বাজার সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়। তিনি প্রাণ-আরএফএল কর্তৃক মেলায় প্রদর্শিত বহুমুখী প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি দুরন্ত বাইসাইকেল, ট্রাভেল লাগেজ, গুডলাক স্টেশনারি এবং উইনার ক্লোথিংকে সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের দুটি স্টলে প্রাণ-আরএফএল এর প্লাস্টিক পণ্য, দুরন্ত বাইসাইকেল, ট্রাভেল লাগেজ, গুডলাক স্টেশনারি, উইনার ক্লোথিং এবং ভিশন ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ছাড়াও হাইকমিশনের পক্ষ থেকে চামড়াজাত পণ্য, পাটপণ্য, হস্তশিল্প এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকাশনা প্রদর্শিত হচ্ছে।

এছাড়া লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প, প্যাকেজিং শিল্প, বাংলাদেশে ব্যবসা-বিনিয়োগ সংক্রান্ত নানান ধরনের প্রকাশনা, পর্যটন ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলা উদ্বোধনের দিন থেকেই বাংলাদেশি স্টলসমূহে বিদেশি ব্যবসায়ীসহ দর্শনার্থীদের ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং প্রদর্শিত বাংলাদেশি পণ্যসমূহ সম্পর্কে ইতিবাচক আগ্রহ দেখা গেছে।

ঢাকাস্থ এলিয়েন্ট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় এর সদস্য প্রতিষ্ঠান রাজু ইঞ্জিনিয়ারিং, নওগাঁ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, নওগাঁ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সুইস বায়োহাইজেনিক ইকুপমেন্টস লিমিটেড, মেশিনঘর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, সাত্তার মেটাল ইন্ডাস্ট্রিস, রিপন মেটাল ইন্ডাস্ট্রিস, রেলেক্স মেটাল ইন্ডাস্ট্রিস, ফেয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস এবং এর তথ্যবহুল প্রকাশনা ও তথ্যচিত্র এবং এর সদস্য প্রতিষ্ঠান আকিজ প্লাস্টিকস, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিস এবং আমান টয় ইন্ডাস্ট্রিসের বহুমুখী প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী সংগ্রহপূর্বক বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট শিল্পসমূহ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বাংলাদেশ হাইকমিশনের স্টলে আগত দর্শনার্থীদের মাঝে তুলে ধরা হচ্ছে।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। এছাড়া মালয়েশিয়া বাংলাদেশে বিশ্বের নবম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।

এমআরএম/জেআইএম