ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

টরন্টোয় নরসিংদী জেলাবাসীদের মিলনমেলা

আহসান রাজীব বুলবুল | প্রকাশিত: ১১:৪৩ এএম, ২৫ আগস্ট ২০২২

দিনভর আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে স্কারবরোর অ্যাডামস পার্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নরসিংদী জেলা পিকনিক- টরন্টো’। পার্কের মনোরম পরিবেশ আর গ্রীষ্মঋতুর উষ্ণ পরশ পিকনিকের পরিবেশকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলেছিল। আবহাওয়ার ভবিষ্যতবাণী অবশ্য ছিল বজ্রপাতসহ দিনভর বৃষ্টি হতে পারে।

কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে প্রকৃতি তার সেই রুদ্ররূপ নিয়ে হাজির হয়নি সেদিন। সকালের দিকে থেমে থেমে দশ/পনের মিনিট হালকা বৃষ্টিপাত হলেও সারাদিন ছিল সুন্দর আবহাওয়া। ছিল মেঘ আর রোদের খেলা এবং সেই সঙ্গে মৃদু হাওয়া।

সকাল থেকেই লোকজন আসতে থাকেন পিকনিকস্থলে। বেলা ১২টা নাগাদ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। তার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার পর্ব। এই পর্ব পরিচালনা করেন আসাবউদ্দিন খান, নজরুল ইসলাম ও বজলুর রহমান। শিশু-কিশোরদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জমে উঠে খেলাধুলার পর্ব। এই সময় মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে দর্শকরা তাদের উৎসাহ যোগান।

দুপুরে পরিবেশন করা হয় মধ্যাহ্ন ভোজ। অতিথিরা ওই সময় সুশৃংখলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহ করেন। মজাদার বিভিন্ন পদের খাবার খেয়ে সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেন।

অপরাহ্নে আবারও শুরু হয় খেলাধুলার পর্ব। এতে অংশ নেন বয়স্করা। ফুটবলসহ আরও কয়েক ধরনের খেলার আয়োজন ছিল বয়স্ক নারী-পুরুষদের খেলাধুলার পর্বে। স্বেচ্ছাসেবীরা সচেষ্ট ছিলেন সুচারুরূপে সবকটি খেলা পরিচালনা করার জন্য। অন্যদিকে অংশগ্রহণকারীরাও স্বতস্ফুর্তভাবে মেতে উঠেন খেলায়।

পিকনিক স্থলে আগত অতিথিরা খেলাধুলার পাশাপাশি মেতে উঠেন অন্তরঙ্গ আড্ডায়। এরই ফাঁকে ফাঁকে তারা অবচেতন বা সচেতন মনে খুঁজে বেড়ান নিজ গ্রাম বা পাশের গ্রামের কাউকে পাওয়া যায় কিনা। কে জানে হয়তো কাছের বা দূরের কোনো আত্মীয় বা বন্ধু বা এক সময়ের সহপাঠীকে খুঁজে পাওয়াও যেতে পারে পিকনিক স্থলে যার সঙ্গে সম্ভবত কয়েক দশক ধরে দেখা হয়নি।

করোনার কারণে গত দুই গ্রীষ্ম ঋতুতে নরসিংদী যাদের হোম ডিস্ট্রিক এবং বর্তমানে টরন্টো বাস করছেন স্থায়ীভাবে, তাদের উদ্যোগে কোনো পিকনিক অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে সবাই উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছিলেন আবার কবে পিকনিক হবে এবং সবার সঙ্গে দেখা হবে। এ বছর সেই সুযোগ আসাতে সবাই বিপুল উৎসাহ নিয়ে পিকনিকে যোগ দেন। শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণও ছিল এবার চোখে পড়ার মতো এবং দিনভরই তারা মেতে ছিল খেলাধুলায়।

বিকেলে খেলা শেষে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এতে বিভিন্ন ইভেন্টে যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন তাদের পুরস্কৃত করা হয়।

এবারের পিকনিকে র্যাফেল ড্রয়ের বড় আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশ বিমানে টরন্টো–ঢাকা, ঢাকা-টরন্টো রিটার্ন টিকিট ও ৫৮ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি। বিমানের টিকিটটি স্পন্সর করেন রিয়েল এস্টেট ব্রোকার আনোয়ার কামাল। আর ৫৮ ইঞ্চি টিভি স্পন্সর করেন রিয়েলটর মনির ইসলাম।

টরন্টোয় নরসিংদী জেলাবাসীদের মিলনমেলা

এছাড়াও আরও যারা র্যাফেল ড্রতে পুরস্কার দেন তারা হলেন, শেখ হাসিব হোসেন, মিঠু সোম, খন্দকার বিটু হক, আলাউদ্দিন কাজল, সোহেল, দুলাল ভৌমিক, জামসেদ মোবারক, নাসরিন সুলতানা ও বজলুর রহমান। এদের মধ্যে বজলুর রহমান ছাড়া বাকি সবাই রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।

এবারের পিকনিকে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদীর প্রায় আড়াইশত লোক। যারা পিকনিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তাদের মধ্যেও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাংলাদেশি মিডিয়ার প্রতিনিধিরাও। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশের অব ম্যানপাওয়ার অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট মিনিস্ট্রির সাবেক মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার) আব্দুস সাত্তার খান। এদের দুজনের জন্মই নরসিংদী জেলায়।

পিকনিকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তারা হলেন, মর্টগেজ ব্যবসায়ী এ বি এম খান, আসাবউদ্দিন খান (আসাদ) ও বজলুর রহমান (মারুফ)। তাজমহল ফুডসের স্বত্তাধিকারী রিয়াজ আহমেদ। রিয়েলটর মনির ইসলাম, আবুল হাসনাত, রাকিব জামান ও রাফি আলম। ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক ও ওমর জাহিদ।

মিডিয়া প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলা কাগজ’ এর প্রধান সম্পাদক এর এম আর জাহাঙ্গীর, ‘নতুনদেশ.কম’ এর প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক শওগাত আলী সাগর, ‘এনআরবি টিভি’র প্রধান নির্বাহী ও ‘বাংলা মেইল’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক শহীদুল ইসলাম মিন্টু, ‘নন্দন টিভি’র স্বত্তাধিকারী ও প্রধান নির্বাহী উৎপল দেবনাথ, ‘প্রবাসী কণ্ঠ’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও প্রকাশক খুরশিদ আলম, ‘সুখবর’ এর সম্পাদ মন্ডলীর সভাপতি সৈয়দ শামসুল আলম।

পিকনিক উদ্যোক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহজাহান সরকার, লুৎফর কবীর কাজল, আবুল হাসনাত, আসাবউদ্দিন খান, এবিএম খান, বজলুর রহমান মারুফ, নজরুল ইসলাম, শওগাত আলী সাগর, আহসান উল্লাহ ও খুরশিদ আলম।

কোনো সমিতি বা সংগঠনের ব্যানারে নয়, বাংলাদেশে নরসিংদী যাদের হোম ডিস্ট্রিক এবং বর্তমানে টরন্টো বাস করছেন স্থায়ীভাবে, মূলত তাদের উদ্যোগেই অনুষ্ঠিত হয় এই বনভোজন।

এমআরএম/জেআইএম