ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

গণতন্ত্র কি হেরে যাচ্ছে বিশ্বের রাজনীতিতে?

প্রবাস ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৮:১৮ এএম, ০৭ জুলাই ২০২৫

শাহ্ জে. চৌধুরী, নিউইয়র্ক

গণতন্ত্রকে বহুদিন ধরে বলা হয়েছে মানুষের শাসনের সবচেয়ে ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে, গণতন্ত্র নানা দিক থেকে আক্রমণের শিকার হচ্ছে— কখনো শক্তিশালী স্বৈরশাসকের হাতে, কখনো গণমাধ্যমের বিকৃত ব্যবহারে, কখনো আবার সাধারণ মানুষের হতাশা ও অনীহার কারণে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

গণতন্ত্র কোথায় হেরে যাচ্ছে?

স্বৈরশাসক ও জনপ্রিয়তাবাদী নেতাদের উত্থান
রাশিয়া, হাঙ্গেরি, তুরস্ক, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও এমন নেতারা ক্ষমতায় এসেছেন, যারা গণতান্ত্রিক কাঠামো ব্যবহার করলেও স্বৈরতান্ত্রিকভাবে শাসন করেন। তারা আদালত, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে এনে ‘গণতন্ত্রের ভেতর থেকেই’ গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছেন।

গণমাধ্যম ও তথ্যের যুদ্ধ
সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা মানুষকে বিভক্ত করছে, সত্যকে ঝাপসা করছে। ফলে ভোটাররা প্রায়ই ভুল তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

অর্থনৈতিক বৈষম্য ও হতাশা
ধনী ও দরিদ্রের ব্যবধান ক্রমেই বেড়েছে। অনেক সাধারণ মানুষ মনে করছেন, গণতন্ত্র তাদের সমস্যার সমাধান দিতে পারছে না। এই হতাশা স্বৈরশাসক ও কর্তৃত্ববাদী চিন্তাধারাকে শক্তি জুগিয়েছে।

নাগরিকদের উদাসীনতা
গণতন্ত্র টিকে থাকে সচেতন ও সক্রিয় নাগরিকদের ওপর। কিন্তু অনেক দেশে রাজনৈতিক ক্লান্তি, হতাশা, বা ভীতির কারণে মানুষ ভোট দেওয়া বা প্রতিবাদ করা ছেড়ে দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তাহলে কি গণতন্ত্রের মৃত্যু হচ্ছে?

পুরোপুরি মৃত্যু বলা যাবে না। বরং বলা যায়, গণতন্ত্র এখন এক বড় পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের বহু দেশে এখনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরালো হচ্ছে — যেমন দক্ষিণ এশিয়ার অনেক আন্দোলন, লাতিন আমেরিকার নতুন উত্থান।
গণতন্ত্রের শক্তি হলো, মানুষ যখন বুঝতে পারে তার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তখন তারা রাস্তায় নামতে জানে। তাই বলা যায়, গণতন্ত্র দুর্বল হলেও এখনো তার প্রাণশক্তি ফুরায়নি।

কেন হেরে যাচ্ছে?

গণতন্ত্র হেরে যাচ্ছে সেখানে, যেখানে —
আইন ও ন্যায়বিচার দুর্বল।
নাগরিকরা দায়িত্বশীল ভূমিকা নিচ্ছে না।
রাজনৈতিক দলগুলো নীতিহীন ও স্বার্থপর হয়ে পড়েছে।
গরিব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বারবার উপেক্ষিত।
শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব রয়েছে।

উপসংহার

গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে মানুষের মধ্যে নতুন করে আস্থা জাগাতে হবে। গণমাধ্যমকে সৎ থাকতে হবে, বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করতে হবে, বৈষম্য কমাতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা — নাগরিকদের নিজেদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
গণতন্ত্র কখনো চিরজীবী নয় — তাকে রক্ষা করতে হয়। যদি তা না করি, তাহলে গণতন্ত্রের পরাজয় কেবল সময়ের অপেক্ষা।

বিজ্ঞাপন

এমআরএম/এমএস

বিজ্ঞাপন