দক্ষিণ কোরিয়ায় মুসলমানদের কোরবানি
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি মসজিদে মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায় করছেন।
মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান
দক্ষিণ কোরিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ—তাদের অধিকাংশই অভিবাসী ও শ্রমজীবী। ঈদুল আজহায় কোরবানির বিধান পালন করা তাদের জন্য বেশ জটিল।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যক্তিগতভাবে বা উন্মুক্ত স্থানে পশু জবাই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোরবানি দিতে হলে সরকারি অনুমোদিত বুচার হাউস বা স্লটার হাউস ব্যবহার করতেই হয়। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি বা খোলা মাঠে কোরবানি করা আইনত অপরাধ।
প্রবাসীরা যেভাবে কোরবানি করেন
দক্ষিণ কোরিয়ার মুসলমান প্রবাসীরা দুইভাবে কোরবানি করে থাকেন—
১. নিজ দেশে অর্থ পাঠিয়ে পরিবার বা কোনো বিশ্বস্ত সংগঠনের মাধ্যমে কোরবানি করানো।
২. কোরিয়ার অভ্যন্তরে সীমিতসংখ্যক মুসলমান বুচারদের মাধ্যমে আগেই বুকিং করে কোরবানি দেওয়া। তবে এ সুযোগ পাওয়া সব সময় সহজ হয় না এবং আগে থেকে বুকিং নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক।
কোরবানি ও মাংস সংগ্রহের পদ্ধতি
দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজের হাতে কোরবানি করা বা কোরবানির মাংস সংগ্রহ করার উপায় নেই। হালাল লাইসেন্সধারী বুচারদের মাধ্যমেই কোরবানি করতে হয়। তারা কোরবানি সম্পন্ন করে নির্দিষ্ট সময় পর প্যাকেট করে মাংস বুঝিয়ে দেন।
কোরবানি এখানে তুলনামূলক অনেক বেশি খরচসাপেক্ষ। একটি ছাগল বা ভেড়া কোরবানি করতে খরচ পড়ে প্রায় ৩০০–৪০০ মার্কিন ডলার। গরু কোরবানির ব্যয় আরও বেশি।
এত জটিলতার পরও কোরবানি করেন বহু মুসলমান
এত জটিলতা ও সীমিত সুযোগের মধ্যেও প্রতি বছর বহুসংখ্যক দক্ষিণ কোরীয় ও প্রবাসী মুসলমান ঈদুল আজহায় কোরবানির বিধান পালন করেন।
আনসান, ইনচন, আনইয়াং, সিওল, পুসানসহ কিছু শহরে মুসলিম কমিউনিটি কোরবানিকে কেন্দ্র করে সচেতনতা বৃদ্ধি, হালাল বুচারদের সংযোগ এবং যৌথ কোরবানির আয়োজন করে থাকে। কিছু মসজিদ কমিউনিটি ও ইসলামিক সামাজিক সংগঠন মুসলমানদের সহায়তা প্রদান করে।
লেখক: ইমাম ও খতিব, আনসান মসজিদ, দক্ষিণ কোরিয়া
ওএফএফ/জেআইএম